1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ অপরাহ্ন

রাঙামাটিতে আনারসে মানবদেহের ক্ষতিকারক রাইফেন

রিপোর্টার
  • আপডেট : রবিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

নির্মল বড়য়া মিলন,রাঙামাটি: আনারস ফলের আদি জন্মস্থল দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ। তবে বর্তমানে ক্রান্তয়ী অঞ্চলে বিশ্বের সর্বত্রই এর চাষের ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। কোস্টারিকা, ব্রাজিল এবং ফিলিপিন্স এই তিনটি দেশ একত্রে বিশ্বের সমগ্র আনারস উৎপদনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ উৎপাদন করে। সূত্র : উইকিপিডিয়া।
বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে আনারসের চাষাবাদ হয় প্রায় শত বছর ধরে। বিশেষ করে রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ১০ উপজেলায় কম-বেশী প্রচুর আনারসের চাষ করা হয়।
সরেজমিনে বেশ কয়েকটি আনারস বাগান ঘুরে দেখা গেছে, রাঙামাটিতে ইদানিং একশ্রেণির মুনাফা লোভি চাষী আর ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে আনারসের মৌসুমের আগে আনারস গাছের গোড়ায় ভিটামিন নামের ঔষধ দিয়ে আগাম ফলন নিয়ে আসে, তার সেই গাছে দ্রুত ফলন বা আনারস বড় করার জন্য হরমোন ঔষধ স্প্রে করে এবং সেই ফলনে অথবা আনারসের পাকার রং আসার জন্য রাইফেন নামক ঔষধ স্প্রে করে আনারস পাকানো হয়।
যা দেখতে লোভনীয় বাহির থেকে দেখতে মনে হয় আনাসর পেকে রসে টইটুম্বর বা সুস্বাদু হবে। আসলে এসব আনারস অপরিপক্ক এবং কচি। এধরনের আনারস খাওয়ার পর মুখ ও গলা চুলকাতে থাকে।
তাহলে কি মানুষ নিজের টাকা দিয়ে আসানারসের নামে বিষ ক্রয় করে খাচ্ছেন ?
এবিষয়ে রাঙামাটি শহরের কলেজ গেইট এলাকার পাইকারী-খুচরা আনারস ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানান, তিনি জেলার ঘিলাছড়ি, কুতুকছড়ি, পুটিখালি, নানিয়ারচর, নানিয়ারচরের ১৭ মাইল নামক স্থান থেকে ছোট-বড় গড়ে প্রতিটি আনারস ২৩/= টাকা ধরে ক্রয় করে আনেন।
এসব আনারস খুচরা ছোট জোড়া ৩০/= টাকা, মাঝারী জোড়া ৬০/= বড় সাইজের আনারস ৯০/= টাকা ধরে বিক্রয় করে থাকে।
মূলতঃ এসব আনারসের ক্রেতা কারা ? জানতে চাইলে ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম জানায়, তারা ৫-৭ জন ব্যবসায়ী তাদের আনারস বিক্রয়ের স্থানটি শহরের প্রাণ কেন্দ্র কলেজ গেইট চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মুল সড়কের পাশে হওয়াতে ট্যুরিষ্ট, সেনা বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন আন-সিজন (অসময়ের) আনারস ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যান। কেবলমাত্র কলেজ গেইট এলাকায় প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার আনারস পাইকারী ও খুচরা বিক্রয় তথ্য নিশ্চিত করেন এ আনারস ব্যবসায়ী।
কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ (সিআরবি) রাঙামাটি পার্বত্য জেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. আলি আজম বলেন, আন-সিজনে (অসময়ে) বড় বড় পাকা আনারস দেখে ১শত টাকা দিয়ে ১ জোড়া জলডুবী আনারস বাসায় নিয়ে খাওয়ার সময় দেখি আনারস শক্ত কচ-কচ করছে। পাকা আনারস তো নরম মিষ্টি বা টক হয় কিন্তু এবার প্রথম দেখলাম অপরিপক্ক আনারস মিষ্টি নেই, টকও নেই, বলতে গেলে এসব আনারসের কোন স্বাদ বা গন্ধ নেই। বিষযুক্ত আনারস চাষী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রম্যমান আদালত বসিয়ে এদের শান্তির আওতায় আনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে নানিয়াচরের আনারস চাষী অমূল্য বিকাশ চাকমা বলেন, আগাম ফলন পাওয়ার জন্য তারা আগাম হানিকুইন জাতের আনারস গাছের চারা রোপন করেন। এসব আনারস গাছে দ্রুত ফলন আসা, আনারস দ্রুত বড় হওয়া এবং আনারসে দ্রুত রং বা পাকানোর জন্য স্প্রে ব্যবহারের কথা স্বীকার করেন।
এবিষয়ে নানিয়ারচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. টিপু সুলতান বলেন, ৩টি কারণে অসময়ে চাষীরা আনারসের চাষ করে থাকেন। প্রথম তো- আনারসের মৌসুম হচ্ছে জুন-জুলাই মাসে, যাকে আমরা মধুমাস বলে থাকি। মধুমাসে আম, কাঠাল,লিচু ও আনারসে বাজার ভরে যায়, তখন আনারসের চাহিদা বা দাম অনেক কম থাকে, ফলের বাজারে আনারস প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না।
২য় তো- জুন- জুলাই মাসের দিকে বর্ষ মৌসুমে চাষীরা আনারস বাগান থেকে কাটার পর-পর বিক্রয় করিতে না পারিলে আনারস পচে যায় বা অধিকাংশ নষ্ট হয়ে যায়। চাষীর তাদের পণ্যের যথাযথ দাম পায় না।
৩য় তো- আনারসের ফলনের ভাল দাম পাওয়ার জন্য চাষীরা আগাম চাষাবাদ করে থাকে। কিন্তু কিছু মোনাফা লোভি চাষী ও ব্যবসায়ী যোগসাজেশ করে অতিমাত্রায় ভিটামিন, হরমোন ও রাইফেনসহ বিভিন্ন কোম্পানীর ঔষধ স্প্রে করে আনারস পাকিয়ে তা বাজার জাত করে থাকে। যা মারাত্মক বে-আইনী কাজ।
এবিষয়ে রাঙামাটি জেলা কৃষি কর্মকর্তা উপপরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, ভাল ফলন হওয়ার জন্য আমরা চাষীদের সহনীয় মাত্রায় ভিটামিন, হরমোন ও ঔষধ স্প্রে বা পিসিআর ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।
কেউ যদি অতিমাত্রায় ভিটামিন, হরমোন ও ঔষধ স্প্রে করে আনারস পাকিয়ে তা বাজার জাত করেন সেইসব আনারস না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
রাঙামাটি জেলা কৃষি কর্মকর্তা আরো বলেন, রাইফেন রাসায়নিক দ্রব্য মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।
রাসায়নিক বা বিষমুক্ত আনারসের উপকারিতা :
আনারস পুষ্টির অভাব দূর করে : আনারস পুষ্টির বেশ বড় একটি উৎস। আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে : শুনতে অবাক লাগলেও আনারস আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার এবং অনেক কম ফ্যাট রয়েছে। সকালে আনারস বা সালাদ হিসেবে এর ব্যবহার অথবা আনারসের জুস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
হাড় গঠনে : আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ। ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড় করে তুলে মজবুত। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যা জনিত যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায় : আনারসের ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে।
চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় : বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, আনারস ম্যাক্যুলার ডিগ্রেডেশন হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে। এ রোগটি আমাদের চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয় এবং আমরা ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাই। আনারসে রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। প্রতিদিন আনারস খেলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।
হজমশক্তি বাড়ায় : আনারস আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকরী। আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন, যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন আনারস খাওয়া অত্যন্ত জরুরি।
রক্ত জমাটে বাধা দেয় : দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির (রক্তবাহী নালি) দেয়ালে রক্ত না জমার জন্য সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত যেতে পারে। হৃৎপিন্ড আমাদের শরীরে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সরবরাহ করে। আনারস রক্ত পরিষ্কার করে হৃৎপিন্ডকে কাজ করতে সাহায্য করে।

Facebook Comments
৬ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি