নির্মল বড়য়া মিলন, স্টাফ রিপোর্টার :রাঙামাটি শহরের ২টি মুদি মালের ও ১টি কুলিং কর্ণার এর দোকান ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার ভোর সোয়া ৬টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের ভেদ ভেদী বাজারে এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ভোরে ভেদ ভেদী বাজারে আলি আজগরের মালিকানাধীন আজগর ষ্টোরের (মুদিমালের দোকান) ভিতর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে পাশের মো. আলমগীর মালিকানাধীন নুসরাত জাহান ষ্টোর (মুদিমালের দোকান) পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে নগদ টাকা, মজুদ রাখা চাউল, ডাউল, সোয়াবিন তৈলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়ে প্রায় ৭০-৮০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ী আলি আজগরের। তিনি বলেন, ওয়ান ব্যাংক ও ইসলামিক ব্যাংক থেকে কোটি টাকার বেশী ঋণ নিয়ে করোনাকালিন দোকানে মানুষের ব্যবহারের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে মজুদ রাখায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে নুসরাত জাহান ষ্টোরের আগুনে পুড়ে প্রায় ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতির দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মো. আলমগীর ও তার ভাইয়েরা। ব্যবসায়ী মো. আলমগীর জানায় তাদের মুদিমালের দোকানের জন্য ব্রাক ব্যাংক থেকে এসএমই লোন নেয়া আছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আলমগীরের দাবি ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান আরো বেশী। অপর দিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া কুলিং কর্ণারের ৩০ হাজার টাকার মালামাল ক্ষয়-ক্ষতির কথা জানা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আলি আজগর ও মো. আলমগীর বলেন, ২০ মিনিট ধরে ফোন করেও রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভেদ ভেদী বাজার এলাকার শত-শত মানুষ ফায়ার সার্ভিসের কেউ সংযোগ পায়নি। পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে আগুনের ঘটনা অবহিত করিলে তার পর রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফায়ার সার্ভিসের অতিব জরুরী টেলিফোন নাম্বার পরিবর্তন করা হয়েছে কিন্তু ফায়ার সাভিসের পক্ষ থেকে কোন বিজ্ঞপ্তি বা শহরে মাইকিং পর্যন্ত করা হয়নি। ফায়ার সার্ভিস আরো আগে আসলে প্রতিটি মুদি দোকানের অর্ধেক মালামাল বাঁচানো সম্ভব হতো বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আলি আজগর ও মো. আলমগীরের দাবি।
আগুনের সূত্রপাত কিভাবে হয়েছে ? জানতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী আলি আজগর বলেন, আমরা কেউ দেখিনি, আল্লাহ দেখেছেন।
এবিষয়ে রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ষ্টেশন অফিসার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, আমাদের ফায়ার ষ্টেশনে ফোন আসে ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে তাৎক্ষনিক আমরা রওনা করি, ভোর বেলায় রাস্তা ফাঁকা থাকায় আগুনের ঘটনাস্থলে আমি ও আমার অগ্নিনির্বাপক দল ৭ মিনিটে পৌঁছি। সকাল ৭টায় ভিতর আমরা আগুন নিভানোর কাজ শুরু করি। দেড় ঘন্টা চেষ্টা করে সকাল সাড়ে ৮টায় আধা পাকা ৩টি দোকান ঘরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই।
আগুনের সূত্রপাত বিষয়ে জানতে চাইলে ষ্টেশন অফিসার বলেন, মুদি মালের দোকানে কোন চুলা বা রান্না করার কোন কিছুই ছিলোনা বা থাকার কথা নয়। ফ্রিজের পিছনের অংশ থেকে বিদ্যুৎ এর শর্টসাকিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলে ধারনা।
আগুনে ক্ষয়-ক্ষতি বিষয়ে জানতে চাই তিনি তাৎক্ষনিক জানাতে পারেনি।
রাঙামাটির লোকাল নাম্বারে ফোন করে রাঙামাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে ফোনে সংযোগ না পাওয়ার বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সঠিক কি-না জানতে চাইলে ষ্টেশন অফিসার মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, রাঙামাটি বিটিসিএল থেকে প্রায় কয়েক দিন পর-পর লোকাল টেলিফোন মেরামত করে দিয়ে যান কিন্তু যখন তখন এ লোকাল ফোনটি নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বিটিসিএল এর পক্ষ থেকে রাঙামাটির লোকাল টেলিফোন নাম্বার পরিবর্তন করা হয়েছে। আগে ছিলো কোড ০৩৫১-***** ৯ সংখ্যার ফোন নাম্বার এখন ০২-********* ১১ সংখ্যার ফোন নাম্বার এতে জরুরী পরিসেবার প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা গুলো এবং সাধারন মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন বলে স্বীকার করেন।#