নাজমুল হোসেন, রাজবাড়ি জেলা প্রতিনিধি:রাতে আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম ভেঙ্গে দেখি বাবা মাকে চাপাটি দিয়ে কুপিয়ে মারছে। দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে ছোট চাচাকে ডাকি। আমাদের চিৎকার শুনে আশেপাশের সবাই ছুটে আসলে বাবা তখন পালিয়ে যায়।'কথাগুলো বলছিলো ৫ম শ্রেনীতে পড়ুয়া ছোট্ট মেয়ে মিম (১১)।
রাজবাড়ী জেলা সদরের বানিবহ ইউনিয়নের বার্থা গ্রামে বিউটি বেগম (২৮) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করেছে তার স্বামী আঃ লতিফ।
বুধবার (১৮ জানুয়ারী) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বার্থা গ্রামের ৪ নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বিউটির মিম (১১) ও মুসা (৪) নামে ২টি সন্তান রয়েছে।
নিহত বিউটির পিতা বিল্লাল মোল্লা বলেন, আমার বাড়ির পাশেই বিউটি তার স্বামী সন্তাদের নিয়ে বসবাস করে। গতরাতে আমার নাতনী মিমের চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি ওদের ঘরের মেঝেতে আমার মেয়ে বিউটির রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে।আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও নিহত বিউটির আপন চাচা আঃ সালাম বলেন, ১২বছর আগে পারিবারিকভাবে ওদের বিয়ে হয়।গত কয়েক বছর ধরে ওদের স্বামী স্ত্রীর মাঝে প্রায় প্রতিদিনই ঝগড়াবিবাদ লেগে থাকতো। অনেকবার বুঝালেও সমাধান হয়নি। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
নিহত বিউটির ভাই মোঃ পারভেজ মোল্লা বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে আমার বোনের স্বামী আঃ লতিফ ঝগড়া বিবাদ করতো।গতরাতে সে আমার বোনকে জবাই করে হত্যা করে পালিয়েছে।আমরা দ্রুত তাঁকে গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।
বিউটির মামাতো ভাই শাহিন মন্ডল জানান, ১২ বছর আগে আব্দুল লতিফ কাজীর সঙ্গে বোন বিউটির বিয়ে হয়। তাদের ১১বছরের মেয়ে ও চার বছরের ছেলে আছে।কয়েকবছর ধরে তাদের প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল। মধ্যরাতে বড় মেয়ে মীমের সামনে বিউটিকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় লতিফ।সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যার বিচার দাবি জানাচ্ছি।
বানিবহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী লুতফর রহমান বলেন, নিহত বিউটির স্বামী আঃ লতিফ এলাকায় ফসলাদী ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা করতো।পারিবারিক ঝামেলার কারনে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একটা ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ।আমরা এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহাদাত হোসেন জানান,পারিবারিক বিরোধের জের ধরে লতিফ কাজী তার স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক লতিফ কাজীকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।পাশাপাশি হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]