লিয়াকত রাজশাহী ব্যুরো, দৈনিক শিরোমণিঃ রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করোনা ভাইরাস বিস্তারের লকডাউনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে কর্মহীন, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ১১টায় নগরীর রিভারভিউ কালেক্টরেট স্কুল মাঠে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর ( Dr. Md. Humayun kabir)।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল( Abdul Jalil), উপপরিচালক (স্থানীয় সরকার) শাহানা আখতার জাহান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নজরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি) বোয়ালিয়া সার্কেল মো. আবুল হায়াত, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ট্রেজারী শাখা, ই-সেবা, ফ্রন্ট ডেস্ক) জর্জ মিত্র চাকমা, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (সাধারণ শাখা এবং ব্যবসা ও বাণিজ্য শাখা) অভিজিত সরকার, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুমন চৌধুরী, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট লসমী চাকমা,রিভারভিউ কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষকা মনোয়ারা বেগম।
মুজিব বর্ষে সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস বিস্তারলাভ প্রতিরোধে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লকডাউন থাকাকালীন সময়ে অসহায় দুঃস্থ পরিবারের মাঝে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল থেকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় এতে প্রায় ২০০ পরিবারের কাছে প্রধানমন্ত্রীর উপহার সম্বলিত প্যাকেট নগরীর দরিদ্র ও অস্বচ্ছল মানুষের মাঝে হস্তান্তর করেন বিভাগীয় কমিশনার।
ত্রাণ হিসেবে একটি প্যাকেটে ২০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি আলু ও ৫০০ গ্রাম সয়াবিন তেল দেয়া হয়।
ত্রাণ বিতরণকালে বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর জানান, করোনা ভাইরাস বিস্তারলাভ প্রতিরোধে সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লকডাউন থাকাকালীন সময়ে যেসব শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে ও নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছে, তাদের প্রত্যেকের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে আজ সমাজের অবহেলিত কর্মহীন, দুঃস্থ ও অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হলো। ভবিষ্যতে দিনমজুর, হিজড়া সম্প্রদায়, হরিজন সম্প্রদায়, মেথর, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বস্তি এলাকার জনগণ ও পরিবহন শ্রমিকসহ যারা অতিকষ্টে দিনযাপন করছে তাদের প্রত্যেককে পর্যায়ক্রমে ত্রানের আওতায় আনা হবে।
বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবীর আরও জানান, রাজশাহী বিভাগের সকল জেলায় এভাবে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা চাই এই পরিস্থিতিতে কেউ অনাহারে থাকবে না। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন সমাজের অসহায় ও অসচ্ছল মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে যারা প্রকাশ্যে সাহায্য নিতে সংকোচবোধ করছে তারা আমাদের কাছে টেলিফোন ও এসএমএস করছেন। তাদেরকে বাসা-বাড়িতে গিয়ে উপহার সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এছাড়াও করোনার এই জরুরী সময়ে সরকারের পাশাপাশি সমাজের ধনার্ঢ্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. হুমায়ুন কবির।
এ সময় জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছি। আজকে প্রায় ২০০ অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী দেয়া হলো। এছাড়াও আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। মহানগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়েও ত্রাণ পৌঁছে গেছে এবং অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কিছু অসচ্ছল পরিবারের মাঝে নগদ অর্থও প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়াও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলা, ১৪টি পৌরসভা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনসহ মোট ৯ কোটি ৯ লক্ষ বরাদ্দকৃত টাকা আজ (শনিবার) থেকে প্রদান করা হবে জানান জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।
নগরীর দড়িখরবনা এলাকার আদরী বেগম ত্রাণ পেয়ে জানান, প্রধানমন্ত্রী আমাকে খাবার দিয়েছেন। সে জন্য আমি খুবই আনন্দিত। আমি তার জন্য দোয়া করি আল্লাহ তায়ালা তাকে হেদায়েত দান করুন।
অপর একজন সুবিধাভোগী নগরীর হিজড়া সম্প্রদায় একজন জানান, লকডাউনে কোন কাজ করতে পারিনি। তাই ঠিক মতো তিন বেলা খেতে পারিনি। আজকে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্যসামগ্রী পেয়েছি, পেট ভরে খাবো। তিনি ত্রাণ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
১ view