কক্সবাজারের পেকুয়ায় মৎস্যঘেরে নিয়ে এক মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে পরিবার। এ ঘটনায় শনিবার (২৪ জুলাই) ভোরে উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের হাজিপাড়া থেকে ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ওই ছাত্রী রাজাখালী বেশারাতুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
ওই ছাত্রীর বাবা জানান, শুক্রবার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল তিনি। বাসায় রেখে যান মেয়ে ও ছেলেকে। তাদের অনুপস্থিতির সুযোগে একই এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে আলমগীর তার দুই সহযোগীসহ তার মেয়েকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে নির্জন এলাকায় নিয়ে তিনজন মিলে ধর্ষণ করে। মেয়ের চিৎকারে এলাকার লোকজন এগিয়ে এলে ধর্ষকরা তাকে রেখে পালিয়ে যায়। লোকলজ্জা ও বাবার ভয়ে বিষপান করে মেয়ে।
এদিকে বড় ছেলের ফোন পেয়ে বাড়িতে এসে দেখেন মেয়ে ছটফট করছে। দ্রুত পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে রেখাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, লোকলজ্জা বা পরিবারকে মুখ কি করে দেখাবে সে জায়গা থেকে বিষপান করতে পারে। তবে জোর করে অনৈতিক কাজ করে ওই তিনজন। তিনি সুষ্ঠু বিচার চান।
আলমগীরকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণ মামলার এজাহার করা হলেও পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ আমলে নিচ্ছেন না বলে জানান ওই মাদরাসাছাত্রীর বাবা।
এজাহার না নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) কানন সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিষপানে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ধর্ষণের বিষয়টি যেহেতু এসেছে তাই দ্রুত ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে বিষয়টি পরিস্কার হওয়া যাবে। তখন এটি নিয়মিত মামলা হয়ে যাবে।
রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আবুল কাশেমের সঙ্গে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে গুঞ্জন আছে। বাকিরা তাকে সহযোগিতা করেছে বলে স্বজনদের দাবি। ভোরের দিকে মেয়েটি কীটনাশক জাতীয় ওষুধ সেবন করে আত্মহত্যা করেছে। এখন পরিবার এজাহার দায়েরের চেষ্টা করছে।
পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমান জানান, ওই মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যুর কারণ সঠিক করে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কীটনাশক জাতীয় কিছু সেবনের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। বিস্তারিত ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে বলা যাবে।