নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত।১৯৬৮ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। তৎকালীন পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি লতিফ বাওয়ানি ও তার ভাতিজা ইয়াহিয়া বাওয়ানির উদ্যোগে এই মসজিদ নির্মাণের পদক্ষেপ গৃহীত হয়। মসজিদে একসাথে ৩০,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে, ফলে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম মসজিদ। তবে মসজিদটিতে জুমার নামাজ ছাড়াও বিশেষত রমজানের সময় অত্যধিক মুসল্লির সমাগম হয় বিধায়, বাংলাদেশ সরকার মসজিদের ধারণক্ষমতা ৪০ হাজারে উন্নিত করে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। বর্তমানে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদটি আটতলা। নিচতলায় রয়েছে বিপণি বিতান ও একটি বৃহত্তর অত্যাধুনিক সুসজ্জিত মার্কেট কমপ্লেক্স। যার নিচতলা ও দ্বিতীয় তলায় রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ জুয়েলারি মার্কেট।
মসজিদের মূল ভবনের দোতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত প্রতি তলায় নামাজ পড়া হয়। এই মসজিদের জুয়েলারি মার্কেট সহ আশপাশের মার্কেট ও এলাকা হতে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসল্লী নিয়মিত নামাজ আদায় করে আসছে। সরকারের ও ইসলামি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এর উদ্যোগে সাধারণ মুসল্লীদের সেবা দানের লক্ষ্যে মসজিদের নানা উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড হাতে নিলেও তা বিভিন্ন অজানা কারনে বাস্তবায়ন হয়নি বলে এমন দাবি করে আসছেন বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ জনাব মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। যিনি একযুগ আগে থেকে মসজিদের সাধারণ মুসল্লীগনের সুযোগ সুবিধার জন্য ও মসজিদের উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন জারি রাখাসহ নানা কর্মকান্ডের কথা বলে আসছেন। বর্তমানের মসজিদের যে সুউচ্চ মিনারটি সকলের নজর কারে তা জনাব মিছবাহুর রহমান সাহেবের প্রচেষ্টার ফসল। দীর্ঘ এক যুগেরও সময় পূর্বে “জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মুসল্লী কমিটি” নামে একটি কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।তিনি এই কমিটির মাধ্যমে নিয়মিত নামাজ আদায়কারী সাধারণ মুসল্লীগনের নানা যৌক্তিক চাহিদার ভিত্তিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।সেই ধারাবাহিকতায় ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ইং রোজ শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় করার পর “জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মুসল্লী কমিটির” উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
উক্ত প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন উক্ত কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সম্মানিত প্রধান উপদেষ্টা, চেয়ারম্যান- বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্য জোট, জনাব মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন উক্ত কমিটির সম্মানিত সভাপতি, দেশের বহু মসজিদ মাদ্রাসা রক্ষনা বেক্ষন করার ধারক, নলচক ইসলামিয়া দারুলউলুম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সমাজ সেবক জনাব আলহাজ্ব মোঃ রুহুল আমিন, সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক জনাব আলহাজ্ব মোঃ মজিবুর রহমান ও সম্মানিত কোষাধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক জনাব মোঃ সালাহউদ্দিন সহ কমিটির অন্যান্য নেত্রীবৃন্দ। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব দিকের রাস্তা দখল মুক্ত করে মুসল্লীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে এবং মসজিদ মাদ্রাসা সহ সরকারের উন্নয়ন কাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক মুসল্লী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। উক্ত প্রতিবাদ সভায় মসজিদের পূর্ব দিকের অবরুদ্ধ করে রাখা রাস্তাটিকে ১৫ দিনের মধ্যে দখল মুক্ত করে সাধারণ মুসল্লীদের স্বাভাবিক চলাচলের জন্য অবমুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষভাবে আহবান করা হয়।
মসজিদের পবিত্রতা রক্ষার জন্য মসজিদের আশপাশের জায়গাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্যও ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতি আহবান জানানো হয়। সভায় কমিটির সম্মানিত সভাপতি জনাব মোঃ রুহুল আমিন বলেন, সকল ধরনের ভালো ও মঙ্গলজনক কাজে সরকারের পাশাপাশি সকলকে এগিয়ে আসা উচিত এবং উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সকলকে সুস্থ চিন্তার চর্চা করা ও মঙ্গলজনক কাজ করতে ও সহযোগিতা করার আহবান জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, এই মসজিদে আমরা যারা নিয়মিত নামাজ আদায় করি তাদের মধ্যে সিংহভাগই এই মসজিদ মার্কেটের নিয়মিত মুসল্লী। আমাদের এই সকল নিয়মিত মুসল্লীগনের অধিকারকে খর্ব করার অধিকার কারো নেই। ধর্মপ্রাণ মুসল্লীগনের জন্যই এই মসজিদ। তাই মসজিদের মুসল্লীগনের সকল রকমের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। পরিশেষে সভায় উপস্থিত আইন শৃংখলা বাহিনীর সকলকে, সাংবাদিক বৃন্দকে, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দকে ও বিভিন্ন মিডিয়া কর্মকর্তাবৃন্দকে সভাকে সফল করতে আন্তরিক সহযোগিতা করার জন্য বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সভাপতি প্রতিবাদ সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।