পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হবে না এমন রফতানিমুখী শিল্পের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উদ্যোক্তারা এ তহবিল থেকে পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ সুদহারে ঋণ নিতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স বিভাগ গত ১৭ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নতুন এ তহবিল গঠনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ শতাংশ (ব্যাংক হারের চেয়ে ১ শতাংশ কম) সুদহারে তহবিল থেকে ঋণ পাবে। আর তারা গ্রাহককে পাঁচবছর মেয়াদি সেই ঋণ দিতে পারবে সর্বোচ্চ বাড়তি ২ শতাংশ সুদহার যোগ করে।
পাঁচ থেকে আটবছর মেয়াদি ঋণে সুদের ব্যবধান হবে সর্বোচ্চ আড়াই শতাংশ এবং আট থেকে ১০ বছর মেয়াদি ঋণে সুদের এ হার হতে পারবে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদহার হবে ৫ থেকে ৬ শতাংশ।
এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেশি হলে তারা ঋণের জন্য বিবেচিত হবে না। কেবল যাদের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি না সেসব প্রতিষ্ঠানই এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবে।
প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের জন্য তহবিলটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যাতে উৎপাদন বেড়ে শিল্পখাতের প্রতিযোগিতা-সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও তা টেকসই হয়। এই তহবিল হবে পুনঃঅর্থায়ন ও আবর্তনশীল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সরকারের রূপকল্প ২০২১, ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন এবং রূপকল্প ২০৪১ মোতাবেক দেশকে উন্নত করতে হলে মাথাপিছু রপ্তানি আয় এবং জিডিপিতে রফতানি আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে। সেক্ষেত্রে রফতানিমুখী শিল্পখাতের আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বিকল্প নেই। এ জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানিমুখী শিল্পখাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ও টেকসইতা অধিকতর বৃদ্ধিকল্পে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া, জ্বালানি সাশ্রয় ও দক্ষতা, কর্মপরিবেশ উন্নয়ন এবং উৎপাদন যন্ত্রপাতি/মেশিনারিজ ও প্রযুক্তির আধুনিকায়ন প্রয়োজন।
রফতানি নীতির আওতায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাওয়া ও বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতের পাশাপাশি আরও ১১টি খাতে এই ঋণ বিতরণ করা যাবে। খাতগুলো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিল্পের মুখ্য উৎপাদন, জ্বালানি দক্ষ বা নবায়নযোগ্য জ্বালানি; বিজনেস প্রসেসিং রি-ইঞ্জিনিয়ারিং/বিজনেস প্রসেস অটো-সংক্রান্ত; অপারেশন ম্যানেজমেন্ট; বর্জ্য ব্যবস্থাপনা; বায়ু ব্যবস্থাপনা; তাপ ব্যবস্থাপনা; কর্মপরিবেশ (অগ্নিব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা) ব্যবস্থাপনা; পানি ব্যবহার ব্যবস্থাপনা; মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত আধুনিক প্রযুক্তি; হিসাবায়ন ও ইনভেনটরি ব্যবস্থাপনা; বিপণন, বিক্রয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার অটোমেশন।’