বিল্লাল হোসেন সোহাগ, শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে হঠাৎ করেই আটা ও ময়দার দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধিতে ভোক্তা সাধারণ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। অনেকেই তেলের মতো আরও দাম বেড়ে এসব পণ্য বাজার থেকে তা উধাও হওয়ার আশঙ্কা করছেন। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়লেও এখনও পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে ফলে সংকটের সম্ভাবনা নেই। এদিকে বাজার মনিটরিং টিম ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগ বলছে, তারা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করে যাচ্ছে; যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কেউ বাড়তি মুনাফা না করতে পারে।ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের বৃহৎ গম উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে সারাদেশে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে মফস্বল শহর শেরপুরেও। শেরপুর জেলা শহরের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজিতে আটা-ময়দার দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরাও বর্ধিত মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে আগের দরে যেসব দোকানে আটা-ময়দা রয়েছে, তারা সেই দামেই বিক্রি করছেন বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, সব দোকানেই বর্ধিত মূল্যে আটা-ময়দা বিক্রি করা হচ্ছে।এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা ঢাকার পাইকারি আড়ত থেকে থেকে বেশি দামে কিনে এখানেও সেই অনুযায়ী বিক্রি করছেন। তবে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। শহরের নয়ানী বাজারের একাধিক পাইকারি ও খুচরা দোকানিরা জানান, তারা ঢাকা থেকেই বেশি দামে আটা-ময়দা কিনে এনে সেই হিসাবেই তারা বিক্রি করছেন। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি আটা ও ময়দার দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই তারাও সেই অনুপাতে গায়ের মূল্য অনুযায়ী বিক্রি করছেন। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে না।এদিকে শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় আটা-তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রুটির আকারও ছোট হয়ে গেছে। ফলে শহরের মেস ও হোস্টেলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা পড়েছেন বেকায়দায়। তারা জানান, কিছুদিন আগে আটার দাম বৃদ্ধির কথা বলে ৫ টাকার রুটি ১০ টাকা করেন বিক্রেতারা। কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই রুটি এখন সেই আগের ৫ টাকার মূল্যের রুটির সমান হয়ে গেছে। বিভিন্ন মেসের শিক্ষার্থীরা জানায়, কিছুদিন আগেও তারা মাত্র ৩০ টাকায় সকালের নাশতা শেষ করতে পারতেন। এখান-সেখানে খরচ হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।রেস্তোরাঁ মালিকরা জানান, আটার পাশাপাশি তেলসহ অন্যান্য জিনিসের দাম বেশি হওয়ায় আমরা রুটির দাম বৃদ্ধি ও আকারও ছোট করতে বাধ্য হয়েছি।এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী পরিচালক রুবেল আহমেদ জানান, আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধি হলেও শহরের কোনো ব্যবসায়ী যেন কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারেন, সে জন্য শহরের বিভিন্ন দোকানে শতর্ক করাসহ নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। এছাড়া ওপর থেকে নির্দেশনা মোতাবেক কোনো ব্যবসায়ী যেন গায়ের মূল্যের চেয়ে কেউ বেশি দরে বিক্রি না করতে পারেন, সে জন্যও মনিটরিং করা হচ্ছে।