রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || মঙ্গলবার | ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
শেরপুর শহরের শতবর্ষিয় গাছ কেটে ফেললো সওজ
বিল্লাল হোসেন সোহাগ, শেরপুর প্রতিনিধি: দেড় শত বছরের পুরোনো শেরপুর পৌর শহরের প্রধান সড়ক সজবরখিলা-খোয়ারার পাড় মোড় পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের শত বছরের পুরোনো আম গাছসহ অন্যান্য গাছ কেটে ফেলেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
জানা গেছে, শেরপুর জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে দিয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক রয়েছে। ওই সড়কের দুই পাশে প্রায় শত বছরের পুরোনো আম-কাঁঠাল-জামসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ছিলো। যা পর্যায়ক্রমে রাস্তার উন্নয়ন বা প্রশস্তকরণ কাজে গাছগুলো কাটা পড়ে যায়। সর্বশেষ শত বছরের স্মৃতি হিসেবে শহরের সজবরখিলা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দুরত্বের খোয়ারারপাড় মোড় পর্যন্ত বেশ কয়েকটি বিশাল আকারের আম গাছ শতাব্দির ঐতিহ্য ধরে রেখে ঠাঁই দাড়িয়ে ছিলো। ২৩ এপ্রিল শনিবার সেগুলোকেও কেটে ফেলা হলো ওই সড়কের প্রশস্তকরণের নামে।
এসব গাছ কাটার বিষয়ে স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলেও কোন কাজ হয়নি। পরে তারা এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোষ্ট করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে এই গাছ কাটার বিষয়ে শহরের কোন সামাজিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন প্রতিবাদ বা এগিয়ে আসেনি। বিভিন্নজনে মন্তব্য করেন যে, পরিবেশবাদীরা নিরব কেন, উন্নয়নের কেউ কেউ পরিবেশ ঠিক রেখে অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবী জানায়। কেউ বলেন, শৈশবের নানা স্মৃতি এই আম গাছগুলো, এই গাছ কাটার প্রতিবাদে আন্দোলন করা হবে। কেউ কেউ বলছে, গাছগুলোর জন্য কান্না পাচ্ছে। প্রচন্ড গরমের দিন এই গাছগুলো রিক্সা চালক ও পথিকদের শন্তির ছায়া দিতো। এছাড়া ওই গাছে বাস করতো অসংখ্য দেশীয় বিভিন্ন জাতের পাখি। অনেকেই আবার দাবী করেছে উন্নয়নের জন্য একান্তই যদি গাছগুলো কাটা হয়ে থাকে তবে যেন রাস্তার কাজ শেষ করে যতগুলো গাছ কাটা হয়েছে তার দ্বিগুন গাছ লাগানো হয়।
এসব গাছ কাটার বিষয়ে সমাজিক সংগঠন জনউদ্যোগের সদস্য সচিব হাকিম বাবুল বলেন, উন্নয়নের জন্য পরিবেশের ক্ষতি হলে সে জন্য ক্ষতি পোষাতে সেসব গাছের দ্বিগুন গাছ রোপনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি ও সমাজসেবক মো. সোলাইমান বলেন, দেশের বহু স্থানে পরিবেশ রক্ষার নানা নির্দশন রয়েছে, যেখানে রাস্তার মাঝখানে গাছ রেখে দুই পার্শ্বে রাস্তার প্রসস্ত কাজ করা হয়। আমাদের ওই সড়কেও সেটা করা যেতো। কিন্তু দেড়শত বছরের পুরোনো শহরের শেষ স্মৃতি চিহৃটুকুও শেষ হয়ে গেলো।
এবিষয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীণ ভয়েজ এর সমন্বয়ক মারুফুর রহমান বলেন, এমনিতেই শহরের সবুজ কমে যাচ্ছে, তার উপর শত বর্ষের ওই আমগাছগুলো কেটে ফেলায় পরিবেশ ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। এছাড়া জীববৈচিত্রেরও বিরূপ প্রভাব পরবে। কারণ ওইসব পুরাতন গাছগুলোতে অসংখ্য পাখ-পাখালির আশ্রয় ছিলো। এ গাছ কাটার বিষয়ে আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং প্রয়োজনে শহরকে সবুজ রাখতে আন্দোলনে যাবো।
এবিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, রাস্তা প্রশস্থ করণে বিকল্প কোন ব্যবস্থা ছিলোনা বিধায় গাছগুলো কাটা হয়েছে। তবে আমাদের পরিবেশ বিভাগ এর জরিপ করে টেন্ডারের মাধ্যমেই গাছগুলো কাটা হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ হলে দু’পাশে নতুন করে গাছ রোপনের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এতে করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পাবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.