সূচকের বড় উত্থান দিয়ে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হলেও শেষদিকে বিক্রির চাপে বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। আর লেনদেন গতকালের চেয়ে কিছুটা বাড়লেও ১২’শ কোটি টাকার ঘরেই রয়েছে।
ডিএসইর পাশাপাশি অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। অবশ্য ডিএসইর মতো এ বাজারটিতেও লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। এরপর বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলে ১০টা ২২ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ১০ পয়েন্ট কমে যায়।
অবশ্য অল্প সময়ের মধ্যেই আবার ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা গড়ানোর আগেই আবারও ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। ফলে দিন শেষে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হবে এমনটাই স্বপ্ন দেখতে থাকেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
তবে লেনদেনের শেষ দিকে এসে কিছু বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়লে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায়। অতিরিক্ত বিক্রির চাপে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমতে থাকে। ফলে দেখতে দেখতে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়ে যায়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৯৫৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬০৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০১টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হলেও এদিন কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল বস্ত্রখাত। দরপতনের বদলে এই খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৫৮টি বস্ত্র কোম্পানির মধ্যে ৩৫টি দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯টির। আর চারটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ২৯৫ কোটি ১১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ২৭৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১২৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইএফআইসি ব্যাংকের ৭১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৫৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ম্যাকসন স্পিনিং, ওরিয়ন ফার্মা, মালেক স্পিনিং, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, সাইফ পাওয়ার এবং লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫০টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]