স্পোর্টস ডেস্ক
ইউরোপিয়ান ফুটবলের ২০২০/২১ মৌসুমের গ্রীষ্মকালীন দলবদল সদ্যই শেষ হলো। এবারের দলবদলের মৌসুমে ইউরোপ জুড়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দলগুলো। প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো এবার ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। এরপরেই আছে ইতালিয়ান সিরি আ। ইতালিয়ান ক্লাবগুলো এবারের মৌসুমে মোট খরচ করেছে ৭৪৬ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ইউরো। এরপর যথাক্রমে আছে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান, স্প্যানিশ লা লিগা এবং বুন্দেস লিগা।
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ:
২০২০/২১ মৌসুমের দলবদল অপেক্ষাকৃত চুপচাপ হওয়ারই কথা ছিল। কেননা করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ক্লাবগুলো বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তবে ইংলিশ ক্লাবগুলোর ওপর যেন এর কোনো প্রভাবই পড়েনি। অন্ততপক্ষে দলবদলে তাদের অর্থের ঝনঝনানি তো সেটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গ্রীষ্মকালীন দলবদলের মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো মোট ১ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। আর বিনিময়ে খেলোয়াড় বিক্রি করে উপার্জন করেছে ৪৭৩ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ইউরো। অর্থাৎ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো মোট খরচ দাঁড়িয়েছে ৯০১ দশমিক ০৫ মিলিয়ন ইউরো।
আর্সেনাল: নতুন কোচ মিকেল আর্তেতার অধীনে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন আর্সেনালের। সেই লক্ষ্যে মৌসুমটা দুর্দান্ত শুরুও করেছে গানাররা। আর তাই তো দেখা মিলেছে নিজেদের প্রয়োজন মতো খেলোয়াড়দের দলে ভেড়াতে। আর্তেতা নিজের রক্ষণকে আরও দৃঢ় করতে খেলোয়াড় ভিড়িয়েছেন, সেই সঙ্গে মধ্যমাঠেও ভিড়িয়েছেন কয়েকজন খেলোয়াড়। আবার সেই সঙ্গে দল ছেড়েছেন কিছু খেলোয়াড়।
থমাস পার্তে: অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে গেল কয়েক মৌসুম দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। আর তাই তো আর্সেনালের নড়বড়ে রক্ষণকে আরেকটু স্বস্তি দিতে দলবদলের শেষ দিনে পার্তের রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে উড়িয়ে এনেছে আর্সেনাল। তার জন্য গানারদের গুনতে হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ইউরো।
গ্যাব্রিয়েল: লিলে থেকে ২৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে রক্ষণের এই খেলোয়াড় গায়ে চড়িয়েছেন গানারদের জার্সি।
পাবলো মারি: ফ্ল্যামেঙ্গো থেকে ৮ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন এই সেন্টার ব্যাক।
উইলিয়ান: চেলসির সঙ্গে সব পাঠ চুকিয়ে ফ্রি’তে আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।
লুকাস তোরেইরা: আর্সেনাল ছেড়ে ধারে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে নাম লিখিয়েছেন এই মধ্যমাঠের খেলোয়াড়।
লিভারপুল: ৩০ বছর পর প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ী অল রেডরা এবারের মৌসুমে অপেক্ষাকৃত চুপচাপই ছিল। আক্রমণ আর মধ্যমাঠে কয়েকজন সেনা ভেড়ালেও বাকিটা সময় নিরবেই কেটেছে রেডদের।
থিয়াগো আলকান্ত্রা: বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে সদ্যই ইউরোপিয়ান ট্রেবলজয়ী থিয়াগো আলকান্ত্রা নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে নাম লিখিয়েছেন লিভারপুলে। তার জন্য অল রেডদের গুনতে হয়েছে ২২ মিলিয়ন ইউরো।
ডিয়েগো জোটা: আক্রমণভাগে কমতি না থাকলে উলভস থেকে ডিয়েগো জোটাকে ভিড়িয়েছেন ইয়্যুর্গেন ক্লপ। তার জন্য উলভসকে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে লিভারপুল।
লরিস ক্যারিয়াস: লিভারপুলের সাবেক প্রধান গোলরক্ষক লরিস ক্যারিয়াস গেল দুই মৌসুম জুড়ে ধারে খেলছেন নানা ক্লাবে। এবার ধারে ইউনিয়ন বার্লিনে যোগ দিয়েছেন এই রেড গোলরক্ষক।
ম্যানচেস্টার সিটি: বরবারের মতো এই দলবদলের মৌসুমেও ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। এ মৌসুমেও বেশ কয়েকজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড় নাম লিখিয়েছেন সিটিজেনদের ডেরায়। এই নিয়ে সিটিজেনদের হয়ে পাঁচ মৌসুমে ৪১৩ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি কেবল রক্ষণের পেছনেই খরচ করলেন পেপ। এবার অবশ্য রক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণেও টাকা ঢেলেছেন এই স্প্যানিশ কোচ। অবশ্য সেই সঙ্গে দলও ছেড়েছেন কয়েকজন তারকা।
রুবেন ডিয়াজ: বেনফিকা থেকে ৬৮ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে সিটিজেনদের ডেরায় ভিড়েছেন এই সেন্টার ব্যাক। লাপোর্তে, জন স্টোন্সের মতো সেন্টার ব্যাক থাকা স্বত্বেও এই মৌসুমে পর্তুগাল থেকে এই সেন্টার ব্যাককে উড়িয়ে এনেছেন পেপ।
নাথান একে: রক্ষণকে শক্তিশালী করতে কেবল রুবেন ডিয়াজই নয়, সেই সঙ্গে বর্নোমাউথ থেকে নাথান একে’কেও দলে এনেছেন গার্দিওলা। তার জন্য সিটিজেনদের গুনতে হয়েছে ৪১ মিলিয়ন ইউরো।
ফারান তোরেস: আক্রমণভাগে স্টার্লিংদের সঙ্গী হিসেবে ভ্যালেন্সিয়া থেকে ফারান তোরেসকে দলে এনেছেন গার্দিওলা। তার জন্য ২৩ মিলিয়ন ইউরো গুনেছে সিটিজেনরা।
পাবলো মোরেনো: জুভেন্টাস অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে স্ট্রাইকার পাবলো মোরেনোকে ধারে দলে ভিড়িয়েছে সিটি। ধারের ফি হিসেবে প্রদান করতে হয়েছে ১০ মিলিয়ন ইউরো।
নিকোলাস ওটামেন্ডি: সিটিজেনদের ডেরা থেকে এই মৌসুমে বিদায় নিয়েছেন আর্জেন্টাইন এই সেন্টার ব্যাক। তার জন্য বেনফিকা সিটিকে ১৫ মিলিয়ন প্রদান করেছে।
ডেভিড সিলভা: ১০ মৌসুম সিটিজেনদের মধ্যমাঠে আলো ছড়িয়ে অবশেষে স্বদেশে ফিরেছেন ডেভিড সিলভা। সময়ের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডার ফ্রি এজেন্টে রিয়াল সোসিয়েদাদে নাম লিখিয়েছেন।
*এছাড়াও এবারের মৌসুমে ক্লাব ছেড়েছেন দীর্ঘদিন সিটির গোলবারের পাহারাদার ক্লদিও ব্রাভো। তিনি ফ্রিতে রিয়াল বেতিসে যোগ দিয়েছেন।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড: দলবদলের মৌসুম শুরুর আগে থেকেই বেশ ব্যস্ত ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। গুঞ্জন ছিল এবারের মৌসুমে বেশ ব্যস্ত সময়ই পার করবে রেড ডেভিলরা। তবে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে জডান সানচোকে দলে ভেড়ানোর জন্য বেশ উঠে পড়েই লেগেছিল রেড ডেভিলরা। বুরুশিয়া জানিয়ে দিয়েছিল সানচোকে পেতে হলে ১২০ মিলিয়ন ইউরো গুনতে হবে যেকোনো ক্লাবকেই। আর এমন শর্তে আর এগোয়নি ইউনাইটেড। তাই তো জোর গুঞ্জন উঠলেও শেষ পর্যন্ত বুরুশিয়াতেই এই মৌসুম থাকতে হচ্ছে সানচোকে। তবে সানচোকে না পেলেও আক্রমণে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়েছে রেড ডেভিলরা।
এডিনসন কাভানি: পিএসজির হয়ে গেল মৌসুমের মাঝামাঝি সময় থেকেই খেলেননি উরুগুইয়ান এই ফরোয়ার্ড। আর ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে দলবদলের শেষ দিনে নাম লিখিয়েছেন রেড ডেভিলদের ডেয়ায়। তার জন্য কোনো ট্রান্সফার ফি প্রদান করতে না হলে উচ্চ বেতন প্রদান করতে হবে এই স্ট্রাইকারকে। তাকে মৌসুমে ১০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করতে হবে রেড ডেভিলদের।
অ্যালেক্স তেয়াস: এফসি পোর্তো থেকে ১৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এই লেফট ব্যাককে দলে টেনেছে ইউনাইটেড।
ডনি ভ্যান ডি বিক: আয়াক্সের হয়ে গেল কয়েক মৌসুম দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন ডনি ভ্যান ডি বিক। গেল মৌসুমে বেশ কয়েকটি দল তাকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিল। তবে এবারের মৌসুমে এসে তাকে দলে টেনে নিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ডি বিকের জন্য ৩৯ মিলিয়ন ইউরো গুনতে হয়েছে ইউনাইটেডকে।
আমাড ডায়ালো: দলবদলের শেষ দিনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে রেড ডেভিলরা। এদিনেই আটালান্টা থেকে রাইট উইঙ্গার আমাড ডায়ালোকে ৩০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে দলে টেনেছে তারা।
ফাকুন্দো পেল্লিস্ট্রি: পেনারোল থেকে সাড়ে ৮ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে এই রাইট উইয়াঙ্গারকে দলে ভিড়িয়েছে তারা।
টটেনহাম হটস্পার্স: হোসে মোরিনহোর অধীনে নতুন করে দল গড়তে বেশ উঠে পড়ে লেগেছে স্পার্স। তাই তো মোরিনহোর পছন্দের খেলোয়াড়গুলোকে যেকোনো মূল্যেই দলে ভিড়িয়েছে স্পার্স। আক্রমণ এবং রক্ষণ দুই দিকেই মোরিনহোকে খেলোয়াড় এনে দিয়েছে স্পার্স।
কার্লোস ভিনিসিয়াস: বেনফিকা থেকে ধারে এই স্ট্রাইকারকে দলে ভিড়িয়েছে স্পার্স। ধারের জন্য ৩ মিলিয়ন ইউরো গুনতে হচ্ছে লন্ডনের ক্লাবটিকে।
গ্যারেথ বেল: ২০১৩ সালে ১০০ মিলিয়নের বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে গ্যারেথ বেলকে বিক্রি করেছিল স্পার্স। আর তার ৭ বছর পরে এসে তাকেই ধারে দলে ফেরাল দলটি। অবশ্য এর জন্য রিয়ালকে কোনো অর্থ প্রদান করতে না হলেও বেলের উচ্চ বেতন প্রদান করতে হবে স্পার্সকে।
সার্জিও রেগুলন: রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কেবল বেলকেই দলে টানেনি স্পার্স। সেই সঙ্গে গেল দুই মৌসুম দুর্দান্ত পারফর্ম করা লেফট ব্যাক সার্জিও রেগুলনকেও টেনেছে স্পার্স। রেগুলনের জন্য ৩০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে স্পার্স।
এছাড়াও পিয়েরে এমিল হজবার্গকে সাউদাম্পটন (১৭ মিলিয়ন) এবং ম্যাট ডোহার্টিকে উলভস থেকে ১৭ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে টেনেছে তারা।
চেলসি: এবারের দলবদলের মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে চেলসি ফুটবল ক্লাব। প্রায় ২২০ মিলিয়ন ইউরো এবারের দলবদলের মৌসুমে খরচ করেছে ক্লাবটি। রক্ষণ থেকে শুরু করে মধ্যমাঠ এবং আক্রমণেও খেলোয়াড় ভিড়িয়েছে ব্লুজরা।
কাই হার্ভাটজ: বায়ার লেভারকুজেন থেকে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারকে দলে ভিড়িয়েছে চেলসি। তার জন্য ৮০ মিলিয়ন ইউরো গুনেছে ব্লুজরা।
টিমো ভার্নার: ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের দল আক্রমণে এবার বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে ভিড়িয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম জার্মান স্ট্রাইকার টিমো ভার্নার। আরবি লেইপজিগের হয়ে দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়েছেন এই স্ট্রাইকার। তার জন্য অবশ্য লিভারপুলও চেষ্টা করেছিল কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নাম লেখান চেলসিতেই। ভার্নারের জন্য চেলসি খরচ করেছে ৫৩ মিলিয়ন ইউরো।
বেন চিলওয়েল: লেস্টারের হয়ে রক্ষণে দুর্দান্ত পারফর্ম করা চিলওয়েলের ওপর চেলসির নজর ছিল গেল মৌসুম শেষ হওয়ার আগে থেকেই। আর তাই তো দলবদলের মৌসুমে খুব বেশি সময় না নিয়েই তাকে চেলসিতে সাইন করান ল্যাম্পার্ড। চিলওয়েলের জন্য লেস্টারকে ৫০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করেছে ব্লুজরা।
হাকিম জিয়েচ: চেলসির আক্রমণে এবার আরও ভিড়েছেন আয়াক্স থেকে হাকিম জিয়েচ। তাকে অবশ্য শীতকালীন দলবদলের মৌসুমেই সাইন করিয়েছিল তবে ২০২০ সালের জুনেই তার চেলসিতে আসার শর্ত ছিল। তার জন্য ৪০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে চেলসি।
এডুয়ার্ড মেন্ডি: দুই মৌসুম আগে বিশ্বরেকর্ড পরিমাণ অর্থ দিয়ে অ্যাথলেটিক ক্লাব বিলবাও থেকে কেপা আরিজাবালাগাকে দলে ভিড়িয়েছিল চেলসি। তবে তার বাজে পারফরম্যান্সে আর ভরসা রাখতে পারছেন না ল্যাম্পার্ড। তাই তো রেনে থেকে ৩৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভেড়ায় গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডিকে।
থিয়াগো সিলভা: প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর সঙ্গে চুক্তি শেষে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে চেলসিতে নাম লেখিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান সেন্টার ব্যাক থিয়াগো সিলভা।
বিজ্ঞাপন
লেস্টার সিটি: ওয়েসলি ফোফানা সেন্ট এটিন ক্লাব থেকে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লেস্টারে নাম লেখান, এছাড়াও আটালান্টা থেকে টিমোথি কাস্টাহনে ২৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভেড়ায় ক্লাবটি।
এভারটন: বেন গডোফ্রি নরউইচ সিটি থেকে ২৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে মার্সিসাইডের ক্লাবটিতে নাম লেখান। এছাড়া নাপোলি থেকে ২৫ মিলিয়নের বিনিময়ে অ্যালান, ওয়াটফোর্ড থেকে ২২ মিলিয়নে আবডুয়ালে এবং রিয়াল মাদ্রিদ থেকে কলম্বিয়ান তারকা হামেস রদ্রিগেজকে দলে ভেড়ায় এভারটন।
স্প্যানিশ লা লিগা:
এবারের দলবদলের মৌসুমটা বেশ ধীরেই কেটেছে স্পেনে। বিগ ক্লাবগুলো খুব বেশি পরিবর্তন আনেনি দলে। আর তাই তো খুব বেশি অর্থও খরচ হয়নি ক্লাবগুলোর। ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগের ভেতর অর্থ খরচের দিক দিয়ে এবারের মৌসুম স্প্যানিশ লা লিগার অবস্থান চারে। স্প্যানিশ ক্লাবগুলো খরচের চেয়ে বেশি বিক্রি করে অর্থ ঘরে তুলেছে। তাই তো দিন শেষে দেখা মিলছে লা লিগা এবারে লাভ করেছে ৮২ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ইউরো। লা লিগার ক্লাবগুলোর খরচ যেখানে ৪১১ দশমিক ৮ মিলিয়ন ইউরো সেখানে খেলোয়াড় বিক্রি করে উপার্জন ৪৯৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ইউরো।
বার্সেলোনা: উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ভরাডুবির পর দল থেকে বেশ কয়েকজন তারাকাকে ছেটে ফেলেছে বার্সেলোনা। যার মধ্যে আছে ক্লাব কিংবদন্তি লুইস সুয়ারেজ এবং ইভান রাকিটিচরাও। এছাড়াও দলের আক্রমণ, মধ্যমাঠ এবং রক্ষণে এসেছে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়।
মিরোলাম পিয়ানিচ: জুভেন্টাস থেকে ৬০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে পিয়ানিচকে দলে ভিড়িয়েছে বার্সা।
ত্রিনকাও: ব্রাগা থেকে ৩১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সায় এই আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়।
সার্জিনো ডেস্ট: ২১ মিলিয়নের বিনিময়ে এই রাইট ব্যাক দলে ভিড়েছেন আয়াক্স থেকে।
ক্লাব ছাড়া খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম লুইস সুয়ারেজ (ফ্রি এজেন্টে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে), ইভান রাকিটিচ (দেড় মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে সেভিয়াতে), আর্তুরো ভিদাল (ফ্রিতে ইন্টার মিলানে)।
রিয়াল মাদ্রিদ: দলবদলের মৌসুমের সবসময়ই ব্যস্ত সময় পার করে আসছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে এবার স্পেনের ক্লাবটি নিজেদের ইতিহাসের ৪০ বছরে এই প্রথম কোনো খেলোয়াড় দলে না ভিড়িয়েই ইতি টেনেছে দলবদলের মৌসুমের। উল্টো দল থেকে বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বিক্রি করেছে ক্লাব সভাপতি ফ্লোরিন্তিনো পেরেজ। আর বিক্রি করে এবারের মৌসুমেই রিয়াল মাদ্রিদ উপার্জন করেছে ১০০ মিলিয়ন ইউরোরও বেশি। এর মধ্যে আছেন গ্যারেথ বেল এবং হামেস রদ্রিগেজের মতো খেলোয়াড়রাও।
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ: বার্সেলোনা থেকে ফ্রিতে লুইস সুয়ারেজকে দলে টেনেছে অ্যাটলেটিকো, এছাড়াও আর্সেনাল থেকে লুকাস তোরেইরাকে মধ্যমাঠে ভিড়িয়েছে তারা। আর আলভারো মোরাতাকে জুভেন্টাসে ধারে দিয়েছে ১০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। আর দলবদলের বাজারের শেষ দিনে থমাস পার্তের ৫০ মিলিয়ন ইউরোর রিলিজ ক্লজ পরিশোধ করে তাকে দলে টেনেছে আর্সেনাল।
জার্মান বুন্দেস লিগা
জার্মান বুন্দেস লিগা এবার খেলোয়াড় কেন বেচায় লাভ করেছে ১ দশমিক ৭ মিলিয়ন ইউরো। যেখানে ৩২৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ইউরোর খেলোয়াড় ক্রয় করে ৩২৪ দশমিক ৯ মিলিয়ন ইউরোর খেলোয়াড় বিক্রি করেছে জার্মান ক্লাবগুলো।
বায়ার্ন মিউনিখ:
লেরয় সানে: ম্যানচেস্টার সিটি থেকে সানেকে দলে ভেড়ানোর চুক্তি নিশ্চিত হয় গেল মৌসুমের মাঝেই। তবে দলবদলের মৌসুম শুরু হতেই তা অফিসিয়াল ঘোষণা দেয় ক্লাব। তার জন্য ৪৫ মিলিয়ন ইউরো গুনেছে বায়ার্ন।
বুনো সার: অলিম্পিক মার্শেই থেকে ১০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এই ফরোয়ার্ডকে দলে ভেড়ায় বাভারিয়ানরা।
মার্ক রোকা: ৯ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে এস্পানিওল থেকে দলে ভিড়েছে।
এছাড়াও জুভেন্টাস থেকে ধারে ডগলাস কস্টা, পিএসজি থেকে ফ্রিতে চুপো মোটিংকে দলে ভিড়িয়েছে বায়ার্ন। আর থিয়াগো আলকান্ত্রাকে ২২ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লিভারপুলের কাছে বিক্রি করেছে ক্লাবটি।
ইতালিয়ান সিরি আ:
অর্থ খরচের দিক দিয়ে এবারের মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের পরেই অবস্থান সিরি আ’র। তবে সেই সঙ্গে খেলোয়াড় বিক্রি করেও বেশ অর্থ উপার্জন করেছে সিরি আ। ৭৪৬ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ইউরো খরচের বিপরীতে ৭০৯ দশমিক ০৮ মিলিয়ন ইউরো উপার্জন করেছে সিরি আ। এবারের দলবদলের মৌসুমে সিরি আ’র নেট খরচ দাঁড়িয়েছে ৩৭ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ইউরো।
ইন্টার মিলান: আশরাফ হাকিমিকে ৪০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে, নিকোলো বারেল্লাকে ২৫ মিলিয়ন ইউরোড় বিনিময়ে কাগ্লিয়ারি সালসিও থেকে, স্টেফানো সেনসিকে সাসুলো থেকে ২০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে দলে ভিড়িয়েছে ইন্টার। এছাড়াও ফ্রিতে আর্তুরো ভিদাল এবং ধার শেষে ইভান পেরিসিচকে দলে ফিরিয়েছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
জুভেন্টাস: বার্সেলোনা থেকে আর্থার মেলোকে ৭২ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে, আলভারো মোরাতাকে ধারে ১০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে, ফেডেরিকো চিয়েসাকে ধারে ১০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ফিওরেন্তিনা থেকে দলে ভিড়িয়েছে জুভেন্টাস।
* নাপোলি ৭০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে লিলে থেকে ভিক্টর ওসেমহেনকে দলে ভিড়িয়েছে।
ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান:
এবারের দলবদলের মৌসুমে পিএসজি খুব বেশি অর্থ খরচ না করলেও ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানের দলগুলো ৪৩৩ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। বিপরীতে ৩৭৬ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ইউরোর খেলোয়াড় বিক্রি করেছে। অর্থার লিগ ওয়ানের নেট খরচের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৭ দশমিক ২৮ মিলিয়ন ইউরো।
পিএসজি: ইন্টার মিলান থেকে ৫০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে মাউরো ইকার্দিকে দলে টেনেছে পিএসজি। এছাড়া উল্লেখ যোগ্য তেমন খরচ করেনি এই ইউরোপিয়ান জায়ান্ট।
*তথ্যসূত্র: ট্রান্সফার মার্কেট
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]