মোঃ ইনছান আলীজেলা প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ,দৈনিক শিরোমনিঃ আগামী ২৮ শে ফেরুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে চলছে শৈলকূপা উপজেলার চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন। উক্ত উপ-নির্বাচনে ৩ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদন্দিতা করছে। নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী উপজেলার সাবেক আওয়ামীলীগের সভাপতি সদ্য প্রয়াত শিকদার মোশাররফ হোসেন সোনার সহ ধর্মিণী মোছাঃ শেফালী বেগম, ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপি প্রার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দলের সাবেক ছাত্রনেতা হুমায়ন বাবর ফিরোজ ও আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আনিচুর রহমান।
প্রতিদিন নৌকার সমর্থনে মাইকিং, পোস্টারিং, নির্বাচনী সভা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উপজেলার কোথায় চোখে পড়েনি ধানের শীষ ও আনারস প্রতীকের কোন মাইকিং পোস্টারিং, নির্বাচনী সভা সমাবেশ। উপজেলার সর্বত্র নৌকার প্রার্থীর প্রচার প্রচারনা চোখে পড়ার মত। যেখানেই নৌকার সমর্থনে সমাবেশ সেখানেই ব্যাপক জনতার উপস্থিত। সমস্ত উপজেলা ব্যাপী আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা অতীতের সকল দণ্ড ভুলে গিয়ে ঐক্যবন্ধ ভাবে চালিয়ে যাছে নির্বাচনী প্রচার। বিগত নির্বাচনে দণ্ড থাকলেও এবারের নির্বাচনে চিত্র ভিন্ন নেই দণ্ড বিভেদ। তাহাতে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা নৌকা প্রার্থীর জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী।
তবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমায়ন বাবর ফিরোজ বললেন ভিন্ন কথা। নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের নিকট বিস্তার অভিযোগ। সে জানায় উপজেলায় নির্বাচনের পরিবেশ নেই। নির্বাচনে দল তার প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই তার প্রতি শুরু হয়েছে হুমকি ধামকি মনোনয়ন পত্র জমা না দেওয়ার জন্য। তবে জমা দেওয়ার পর তার মনোনয়ন পত্রের প্রস্তাব সমর্থক কে করেছে বাড়ি ছাড়া। নির্বাচনী পোষ্টার টাংগানোর অপরাধে দুই কর্মীকে করা হয়েছে ব্যাপক মারধর। উপজেলা ব্যাপী কর্মীদের চলছে ব্যাপক হুমকি। স্থনীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনী আচারন বিধি ভঙ্গ করে প্রতিনিয়ন নৌকার পক্ষে এলাকায় সভা সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা নির্বাচন কমিশন না দেখার ভান করে বসে আছে। ধানের শীষের ব্যপক জন প্রিয়তায় তারা ভীতু হয়ে এই গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নির্বাচন কমিশনার যদি ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার নিশ্চয়তা প্রদান করতে পারে তাহলে আমার জয় ঠেকাতে পারবে না। নৌকার প্রার্থীর বিজয় লাভ করতে হোলে তাকে অবশ্যই ভোট কেটে কারচুপি করেই জিততে হবে।
এই নির্বাচনে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনিচুর রহমান বলেন, সমস্ত উপজেলা ব্যাপী আমার ব্যাপক সমর্থক রয়েছে। যার কারনে নির্বাচনী প্রচার মাইক বের করার সাথে সাথে আমার প্রচার মাইক আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে ও অপর মাইক ভাংচুর করে ভ্যান চালকের মারধর করেছে। যেখান যেখান পোস্টার টাঙ্গান হয়েছিল তা ছিড়ে ফেলা হয়েছে। যারা সমর্থনে এলাকায় কাজ করছিল তাদের বাড়ীতে বাড়ীতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমাকে প্রতিনিয়ন বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শৈলকূপা উপজেলায় আনারস প্রতীক পরিচিত প্রতীক। যার কারনেই বিগত উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিপরীতে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় লাভ করে। প্রশাসন যদি ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত নিশ্চিত করতে পারে এবং ভোটারা শুধু ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় তাহলে অবশ্যই আমি আনারস প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করব।
তবে এই ভোট নিয়ে জন সাধারণের মাঝে তেমন আগ্রহ নেই, নেই নির্বাচনী আমেজ। চায়ের দোকানে নেই নির্বাচনী শোরগোল। উপজেলার সর্বত্র একই আলোচনা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছাড়া কেউ জিতবে না। যেখানে নৌকা প্রতীক আছে সেখানে অন্য প্রতীকের কি দরকার?
এই নির্বাচন নিয়ে জনসাধারণ কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না তবে তারা জানিয়েছেন যে আমরা শুধু শুনেছি নৌকা ছারাও আরও দুই জন চেয়ারম্যান প্রার্থী আছে কিন্ত তাদের কোন প্রচার প্রচারনা মাঠে দেখা যাচ্ছে না। তাদের আমরা দেখিনি কোথায় ভোট চাইতে।
শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান বলেন জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শৈলকূপায় এখন বিএনপি নেই বললেই চলে। কর্মী সমর্থক না থাকায় বিএনপির প্রার্থী এখন মোবাইলে ভোট চাচ্ছে। শৈলকূপা আওয়ামীলীগের কোন কর্মী সমর্থক তার নির্বাচনী প্রচারে বাধা প্রদান করেনি ও হুমকি দেয়নি। সে আরও বলে যে শুনেছি আনিচুর রহমান নামে একজন নির্বাচনে আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আছে। তবে তাকে কেউ চেনে না। তাকে কেন হুমকি দেবে। নির্বাচনে যদি প্রতি পক্ষ প্রার্থী না থাকে তাহলে সে নির্বাচন প্রানবন্ত হয় না।
উল্লেখ্য গত ৪ ঠা নভেম্বর স্বতন্ত্র উপজেলা চেয়ারম্যান শৈলকূপা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি শিকদার মোশাররফ হোসেন সোনার মৃত্যুতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয়।