গাজীপুর প্রতিনিধি রাকিব হাসান আকন্দ দৈনিক শিরোমণিঃ পরিকল্পিত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পায়ুপথ ও যৌনাঙ্গে সৎ মায়ের
নির্যাতনে আড়াই বছরের শিশু মরিয়ম আক্তার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। সে ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার বাঁশিয়া গ্রামের মোস্তফা কামালের মেয়ে। মোস্তফা দুবাই প্রবাসী। এক মাস শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন থাকার পর রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।শিশুটির সৎ মা আলিফা আক্তার রিপাকে (৩০) মাগুরা জেলার সদর উপজেলার ধনপাড়া গ্রামের রজব আলী বিশ্বাসের মেয়ে। গত ১৪ আগস্ট শিশুর দাদা আফাজ উদ্দিন সৎ মা’কে অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। স্বামীর কাছ থেকে একটি বহুতল পাকা ভবন লিখে নিতে লোভের
বশবর্তী হয়ে সৎ মা এ কাজটি করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।শিশুর দাদা আফাজ উদ্দিন জানান, তার ছেলে মোস্তফা কামালকে গত ১৩ বছর যাবত দুবাই প্রবাস যাপন করছেন। প্রবাসের উপার্জিত অর্থ দিয়ে মোস্তফা কামাল গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা এলাকায় ১৪ শতক জমি ক্রয় করেন। সেখানে তিনি পাঁচ তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেন।আট বছর আগে সাবিনা ইয়াছমিন নামে এক নারীকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করান। তাদের কোলে শিশুকন্যা মরিয়ম আক্তারের জন্ম হয়। শিশুটি জন্মের পর দুবাই প্রবাসকালীন অভিযুক্ত আলিফা আক্তার রিপার সাথে মোস্তফা কামালের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। রিপাও বেশ কয়েক বছর দুবাই প্রবাসী ছিলেন। ওই সম্পর্ক পরে বিয়েতে গড়ায়। তারা উভয়ে দেশে ফেরেন। পরকীয়ায় জড়িয়ে ওই নারী মোস্তফা কামালের প্রথম স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে ত্যাগ করাসহ (বিবাহ বিচ্ছেদ) একাধিক শর্ত দেন। নারীর চাপে সকল শর্তে মোস্তফা রাজী হয়ে প্রথম স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান। ওই সময় শিশু মরিয়মের বয়স ছিল চার মাস। প্রথম স্ত্রীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর আলিফা আক্তার রিপাকে বিয়ে করেন শিশুর বাবা মোস্তফা কামাল। বিয়ের পর গত ছয় মাস আগে তার আড়াই বছরের শিশুকে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে রেখে আবার দুবাই প্রবাসে চলে যান। লোভের বশবর্তী হয়ে নিষ্পাপ শিশুটির পায়ূপথ ও যৌনাঙ্গে নানাভাবে নির্যাতন শুরু করেন।সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছিল।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, হাসপাতালে শিশুটির চিকিৎসা চলছিল। নির্যাতনে পায়ুপথ ও যৌনাঙ্গে সংক্রমণ তৈরি হয়ে তা ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো শরীরে।চিকিৎসকরা শিশুটির অস্ত্রোপচারও করেছিলেন। অভিযুক্ত সৎ মা আলিফা আক্তার রিপা জেল হাজতে রয়েছে। লাশের ময়না তদন্ত শেষে যত দ্রæত সম্ভব
মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।