গাজীপুর প্রতিনিধি:রাকিব হাসান আকন্দ
গাজীপুরের শ্রীপুরে আদালতের স্থিতিবস্থা নির্দেশ অমান্য করে বিবাদী পক্ষ বিরোধপূর্ণ জমি দখলে নেওয়ার জন্য জমিতে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন প্রতিপক্ষ ইমান আলী গং। স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্রের যোগসাজশে আনুমানিক কোটি টাকা মূল্যের ওই জমি দখলের নেওয়ার জন্য তারা সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন।
উপজেলার নয়নপুর (ধনুয়া দক্ষিন পাড়া) এলাকার নূরজাহান গং এবং ইমান আলী গংয়ের মধ্যে ৩৫ শতাংশ জমি নিয়ে প্রায় তিন বছর যাবত আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে ওই জমিতে প্রতিপক্ষ ইমান আলী গং শতাধিক লোকজন নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মানের কাজ করছেন।
জমির মালিক নূরজাহান বেগমের পক্ষে তার দ্বিতীয় ছেলে মকবুল হোসেন রানা বলেন, উপজেলার নয়নপুর এলাকার ধনুয়া মৌজার সাবেক ১৭৮৩, আরএস ৬৭২৮ দাগে ২৩ ও আরএস ৬২৬১নং দাগে মোট ৩৫ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক হয়ে দীর্ঘ ৫১ বছর যাবত ভোগ দখল করে আসছেন। এই জমি নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে প্রায় তিন বছর যাবত আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় নয়নপুর এলাকার প্রতিপক্ষ ইমান আলী গ য়ের পক্ষে আব্দুল মালেক বিরোধপূর্ণ জমি দখলের জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মানের কাজ করছেন। ইমান আলী গং ও তার লোকজন যাতে ওই বিরোধপূর্ণ জমি দখল করতে না পারেন সেজন্য নূরজাহান গং গাজীপুর সিনিয়র সহকারী জজ (২য় আদালত) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর মানীয় আদালত বিরোধপূর্ণ জমির ওপর মোকদ্দমা চলাকালীন জমি হস্তান্তর এবং রূপ ও আকার পরিবর্তন বিষয়ে উভয় পক্ষকে স্থিতিবস্থা (ঝঃধঃঁং ছঁড়) বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট শ্রীপুর সাব-রেজিষ্টার এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্রীপুর মডেল থানাকে নিদের্শ দেন।
আদালতের নিদের্শের পরও ইমান আলী গংয়ের পক্ষে আব্দুল মালেক সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে শতাধিক লোকজন নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিদখলে নেয়ার জন্য ইট দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ করছেন। এ ঘটনার পর নূরজাহান গংয়ের পক্ষে তার দ্বিতীয় ছেলে মকবুল হোসেন রানা জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে সহযোগীতা চাইলে তাকে বারবার ফোন দিয়ে বিরক্ত না করার জন্য বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ইমান আলী গং স্থানীয় প্রভাবশালী একটি ভূমিদস্যু চক্রের সহায়তায় তাদের জমি দখলে নেয়ার জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মান করছে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে ইমান আলী গংয়ের পক্ষে আব্দুল মালেক জানান, তারা এই জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক এবং আদালতে দলিল বাতিলের মামলা দায়ের করেছেন। এটা নিষ্পত্তির বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। এর জন্য তারা অপেক্ষা করতে পারেন না। বিষয়টি তারা আইনগতভাবে দেখবে।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান, আমি সম্প্রতি এ থানায় যোগদান করেছি। আমি আসার আগে আব্দুল মালেক পক্ষ নূরজাহান গংয়ের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করেছিল। পরে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কি হয়েছে তা আমার জানা নেই। আদালতের স্থিতিবস্থা (ঝঃধঃঁং ছঁড়) আমার হাতে পৌছায়নি। আমি আদালতের নির্দেশ না পেলে কোন পক্ষকেই কিছু বলতে পারব না। আদালতের নির্দেশনা হাতে পেলে উভয় পক্ষকে জমিতে কাজ না করার জন্য বা পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করব।