রাকিব হাসান আকন্দ, গাজীপুর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক শিশুকে জ¦লন্ত চুলা থেকে লাকড়ী দিয়ে ডান হাত ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার নিজ মাওনা গ্রামে গত সোমবার দুপুরে এমন ঘটনা ঘটে।অভিযুক্ত মাইন উদ্দিন শ্রীপুর উপজেলার নগরহাওলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি নিজমাওনা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে।ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী বিল্লাল হোসেন মিলন (১০) নিজ মাওনা গ্রামের বুলবুলের ছেলে। সে ছোটকাল থেকেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধি ও স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পারে না।ভুক্তভোগীর মা নাছিমা আক্তার জানান, গত সোমবার দুপুরে বাড়ির নির্মাণ কাজ করছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক মাইন উদ্দিন। এসময় শিক্ষকের প্রতিবেশী বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিল্লাল হোসেন, তার নির্মাণকাজ দেখতে যান। এক পর্যায়ে শিক্ষকের বাড়ীর পাশে রাখা বালির ওপর উঠে শিশু মিলন খেলতে শুরু করেন। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষক
ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তিনি শিশুটিকে মোড়ের রফিজ উদ্দিনের চায়ের দোকানের সামনে নিয়ে জ¦লন্ত লাকড়ী দিয়ে তার হাত ঝলসে দেন। শিশুটির কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠলে স্থানীয়রা এসে লবন ও পানি ক্ষত স্থানে লাগিয়ে শিশুটিকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন।
ঘটনার সময় পাশের ওই দোকানে বসে চা পান করছিলেন জুলহাস উদ্দিন ও আব্দুল করিম। তারা জানান, শিক্ষক এই শিশুটিকে নিয়ে দোকানের সামনে চুলার কাছে আসেন। তারা কিছু বুঝে উঠার আগেই জ¦লন্ত চুলা থেকে আগুনযুক্ত লাকড়ী দিয়ে শিশুটির ডান হাতে ছ্যাঁকা দিয়ে দেন শিক্ষক মাইন উদ্দিন। একজন শিক্ষকের এমন অমানবিক কাজে আমরা তাৎক্ষনিক প্রতিবাদ করলে শিক্ষক ঘটনাস্থল থেকে দ্রত চলে যান।অভিযুক্ত শিক্ষক মাইন উদ্দিন মাষ্টারের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান বলেন, তিনি বিষয়টি জানতেন না। তবে এ খবর শোনা মাত্রই সহকারী প্রাথমিক শিক্ষাকর্মকর্তা নুরুন্নাহারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে জানাবেন।শ্রীপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার জানান, ওই শিশুর বাড়িতে গিয়ে তার মা, বাবা, প্রতিবেশী ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। প্রধান শিক্ষক মাইন উদ্দিনকে তার বক্তব্য লিখিত আকারে জানতে চাওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের দায়িত্বই হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের আদর ভালোবাসার মাধ্যমে শিক্ষা দেয়া। তবে একজন শিক্ষক যদি শিশুকে হাতে আগুণের ছেঁকা দিয়ে থাকেন তা হলে তা নিন্দনীয় ঘটনা। এঘটনার সাথে যদি তার কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, তিনি এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবেন।