আহতরা হলো ড্রাম ট্রাকের চালক হৃদয় মিয়া (৩২) ও সহকারী (হেলপার) অনিক (১৯)। তারা শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছে।
অভিযোগকারী আমিনুল ইসলাম জানান, উর্মী গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কেওয়া নিটিং কারখানার জমিতে মাটি ও বালি ভড়াটের অনুমোদন (ওয়ার্ক অর্ডার) পায় ভাই বন্ধু এন্টারপ্রাইজ। পরে তার ওই কারখানার ক্রয়কৃত জমিতে ড্রাম ট্রাক দিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করে। রবিবার সকালে ৪/৫ গাড়ী বালু ফালানোর পর স্থানীয় কেওয়া পূর্বখন্ড এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে আতাউর রহমানসহ তার সহযোগী সাইদুল ভাঙ্গী, সামাদুল ভাঙ্গী, নাসিম ভাঙ্গী ও জাকির মোড়ল প্রায় ৫০ জন লোক নিয়ে কেওয়া বাজারে ড্রাম ট্রাক আটক করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা চালক হৃদয় ও হেলপার অনিককে মারপিট করে আহত করে। স্থানীয়দের সহায়তায় তারা দৌড়ে প্রাণে রক্ষা পায়। পরে তারা শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য গেলে হামলাকারীদের ভয়ে তাদের স্বজনেরা হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা না দিয়েই নিয়ে আসে।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, অধ্যাপক এমদাদুল হক ও তিনি (আমিনুল ইসলাম) যৌথভাবে ভাই বন্ধু এন্টারপ্রাইজের নামে উর্মী গ্রুপের সকল কাজের অনুমোদন (ওয়ার্ক অর্ডার) দেয় কারখানা কর্তৃপক্ষ। সে অনুযায়ী ওই এন্টারপ্রাইজের পক্ষে আমরা কেওয়া নিটিং কারখানার যাবতীয় কাজের মালামাল বছরেরও বেশি সময় যাবত সরবরাহ করে আসছি। অভিযুক্তরা গত এক সপ্তাহ আগে আমাদের কাছে কাজের ভাগ দেয়ার দাবী করে। পরে তাদেরকে বলে দিয়েছি কাজের ভাগ দেওয়ার কেউ না আমরা। কারখানা কর্তৃপক্ষ যদি আপনাদেরকে নিয়ে কাজ করতে বলে আমরা আপনাদেরকে সাথে নিয়ে কাজ করবো।
অধ্যাপক এমদাদুল হক জানান, উর্মী গ্রুপের আমাদেরকে (ভাই বন্ধু এন্টারপ্রাইজকে) তাদের যাবতীয় কাজ করার লিখিত অনুমতি দিয়েছে। আমরা অনুমোদন (ওয়ার্ক অর্ডার) পেয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করে আসছি। তবে আমাকেসহ আতউর ও সেলিম ‘একতা এন্টারপ্রাইজ’ নামে অনুমোদনের জন্য (ওয়ার্ক অর্ডার) কারখানায় জমা দিয়েছে। কারখানার পক্ষ থেকে ওয়ার্ক অর্ডার অনুমোদনকারী ওমরাহ পালনের জন্য দেশের বাহিরে আছে। উনি আসার পর যদি অনুমতি দেয় আমি তাদেকে সাথে নিয়ে ব্যবসা করার জন্য রাজি আছি। অভিযুক্তরা অবৈধভাবে আমাদের ব্যবসায় বাধা প্রদান করে বিশিৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
অভিযুক্ত আতাউর রহমান জানান, শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্যারের সামনে বসে আমরা তিনজন (অধ্যাপক এমদাদুল হক, আতাউর রহমান ও সেলিম শেখ) যৌথভাবে ‘একতা এন্টারপ্রাইজ’ নামে অনুমোদনের জন্য (ওয়ার্ক অর্ডার) কারখানায় জমা দেই। পরে কারখানা থেকে বলা হয়েছে এটা সময় লাগবে।
আতাউর রহমানের পার্টনার সেলিম শেখ জানান, এমদাদ ভাই আমাদেরকে নিয়ে ওই কারখানায় মালামাল সরবরাহ করার কথা বলে সে একাই বালু ভরাটসহ যাবতীয় কাজ একা করছে। তাই তাকে বালু না দেওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়েছে। চালক ও হেলপারকে মারপিটের অভিযোগ সঠিক না।
উর্মী গ্রæপের ফখরুদ্দিন টেক্সটাইল মিলস্ লি: এর মানব সম্পাদ ও প্রশাসন বিভাগের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) আবুল কালাম জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ ভাই বন্ধু এন্টারপ্রাইজকে কাজ করার অনুমোদন (ওয়ার্ক অর্ডার) দিয়েছে। তারা আমাদের সাথে বৈধভাবে ব্যবসা করছে। ‘একতা এন্টারপ্রাইজ’ একটি আবেদন (ওয়ার্ক অর্ডার) করেছে। তবে তাদের আবেদন এখনো কারখানার পক্ষ থেকে অনুমোদন দেয়া হয়নি।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফুল আলম তালুকদার জানান, বালুর ট্রাক নিয়ে মারামারির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে আমিনুলকে এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।