রাকিব হাসান আকন্দ,শ্রীপুরে উপজেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরে শ্রীপুরে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও অবৈধ গর্ভপাতের অভিযোগে মাদ্রাসার পরিচালক এমদাদুল হককে (২৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে পাঠালে বিচারক কারাগারে পাঠানোর
নির্দেশ দেয়। এর আগে মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলার তেলিহাটি
ইউনিয়নের ছাতির বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শ্রীপুর থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত
করেছেন।
এমদাদুল হক ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার মোজাখালী গ্রামের আব্দুছ
ছিদ্দিকের ছেলে এবং উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ছাতির বাজার এলাকার
দারুল কোরআন মাদ্রাসার পরিচালক।
থানায় দায়ের করা লিখিত এজাহার (অভিযোগ) থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগীর মা
শ্রীপুরে ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করে
এবং বাবা গ্রামে ঘুরে ঘুরে ফেরি করে মালামাল বিক্রি করে। চিকিৎসকের
পরামর্শে শিশুদের সঙ্গে মেশার সুযোগ করতে গত ঈদুল ফিতরের পর স্থানীয় দারুল
উলুম মহিলা মাদরাসায় ভিকিটমকে ভর্তি করেন। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা
পর্যন্ত ভিকটিম অন্য শিশুদের সাথে মাদ্রাসায় থাকতো। ভিকটিমের পরিবারকে
গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় মাদ্রাসার এক শিক্ষিকা মোবাইলে ফোন করে অসুস্থ
থাকার কথা জানান। ওইদিন রাত ৮টায় মাদ্রাসায় গেলে মেয়েকে রক্তক্ষরণরত অবস্থায়
দেখতে পান পরিবারের লোকজন। পরদিন ২২ আগস্ট তাকে নিয়ে ময়মনসিংহের
একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা করানো হয়। সেখান অবস্থার অবনতি
হলে তাকে ময়মনসিংহের কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
ভর্তি করা হয়। ওই হাসাপাতালের চিকিৎসকগণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান,
কিশোরী অন্তঃস্বত্তা ছিল। তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভপাত করা হয়েছে। সেখান
থেকে কিশোরীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা
করানো হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসা শেষে তাকে হাসপাতাল থেকে
বাড়িতে নিয়ে আসে।
ভিকটিমের বাবা জানান, তার মেয়ে কথা বলতে পারে না। মেয়ের কাছে জানতে
চাইলে সে ইশারায় অভিযুক্ত মাদ্রাসার পরিচালক এমদাদকে শনাক্ত করে এবং তাকে
ধর্ষণ করেছে বলে দেখায়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তেলিহাটি ইউনিয়নের ৮ নম্বর
ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলামের নিকট বিচার দাবী করেন তিনি। ইউপি
সদস্য শফিকুল বিষয়টি সমাধানে না গিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবাকে তিনি
থানায় অভিযোগ দিতে বলেন। পরে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভুক্তভোগীর বাবা
শ্রীপুর থানায় এমদাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানান,
ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০
সেপ্টেম্বর) বিকেলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) আদালতে
পাঠালে বিচারকের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।