রাকিব হাসান আকুন্দ ,গাজীপুর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
গাজীপুরের শ্রীপুরে যৌতুকের দাবিতে স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতনে গৃহবধূ মর্জিনা আক্তার (২২) মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী রুবেলকে টঙ্গী থেকে এবং শ্বাশুড়িকে শ্রীপুর থেকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১) সদস্যরা। নিহত মর্জিনা কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার উত্তরটিলি এলাকার মানিক মিয়ার মেয়ে। মর্জিনার চার মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।নিহতের বাবা মানিক মিয়া বলেন, প্রায় আড়াই বছর আগে মুঠোফোনে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিঙ্গা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের রুবেলের সঙ্গে পরিচয় হয় মর্জিনার। মুঠোফোনে পরিচয় থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মর্জিনার স্বামী রুবেল ও শ্বাশুড়ি যৌতুকের জন্য প্রায়ই তাকে নির্যাতন করতো। মর্জিনা সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে ফোন করে জানায় স্বামী ও শাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে সে ঘর থেকে বেড়িয়ে এসেছে। এটাই হইতো তার শেষ কথা। এর চার ঘন্টা পর হাসপাতাল থেকে ফোনে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পাই।মর্জিনার চার মাস বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। তিনি আরো জানান, গত শুক্রবার (২ জুলাই) মর্জিনা মুঠোফোনে তারা বাবাকে জানায় শশুরবাড়ির ঘর মেরামত করার জন্য টাকা দরকার। মেয়ের শ্বশুর বাড়ীতে টাকা পাঠাতে দেরি হওয়ায় স্বামী রুবেল ও তার মা মর্জিনাকে শারিরীকভাবে নির্যাতন চালায়। বিভিন্ন অজুহাতে প্রায়ই মেয়ের স্বামী ও শ্বাশুড়ি আমার কাছে টাকা চাইতো। টাকা না দিলেই মর্জিনার উপর চালানো হতো পাশবিক নির্যাতন।শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত নার্সিং ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সোমবার (৫ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে অজ্ঞাত এক রিকশাচালক গৃহবধূ মর্জিনাকে অসুস্থ অবস্থায় টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে নিয়ে আসার কিছুক্ষণ পরই তার মৃত্যু হয়। নিহতের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চাউলের পোকা নিধনের কীটনাশক ঔষধ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে কীটনাশক ট্যাবলেট খাওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ বলেন, নিহত গৃহবধূ মর্জিনা আক্তারের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।শ্রীপুর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মামুনুর রশীদ জানান,কীটনাশক পানে গৃহবধূ মৃত্যুর খবর পেয়েছি। গৃহবধূর মৃত্যু টঙ্গী থানাএলাকায় হওয়ায় ওই থানা ব্যবস্থা নিয়ে আমাদেরকে কাগজ পত্র দিবে। আমরা এখনো এ সংক্রান্ত কোনো ডকুমেন্ট পাইনি।