দেশ স্বাধীনের পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে ধুঁকছে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। এরই মধ্যে দেশটির জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। শ্রীলঙ্কার পূর্বেকার মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করেছে। জোট সরকার গঠনে সরকারি দলের প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দল। এদিকে তীব্র জন-অসন্তোষের মধ্যেও নতুন করে আবারও ১৭ জন মন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
সিলন টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসের কাছে মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথবাক্য পাঠ করেছেন।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার দায় নিয়ে মন্ত্রিসভার ২৬ সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেন। সে সময় পদত্যাগকারী মন্ত্রীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে নামাল রাজাপাকসেও ছিলেন।
শ্রীলঙ্কার এ দুর্গতির কারণ
দুই কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে নিত্যপণ্যের আকাশছোঁয়া দামে বিপর্যস্ত জনজীবন। আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি, দুর্বল সরকারি অর্থব্যবস্থা এবং করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি দেশটির এই বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
এতে লঙ্কান সরকারের অন্যতম রাজস্ব আয়ের খাত পর্যটনশিল্প ধসে পড়েছে, রেমিট্যান্স পৌঁছেছে তলানিতে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ নেমে এসেছে দুই বিলিয়ন ডলারে।
গত কয়েক বছর শ্রীলঙ্কার রাজনীতি বেশ টালমাটাল ছিল। এই অবস্থায় দেশটির বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ নাটকীয়ভাবে কমে এসেছে। ২০২০ সালে শুরুর দুই মাসে রিজার্ভ ৭০ শতাংশ কমে যায়।
ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারে! শুধু তা-ই না, বছরের বাকি সময়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারকে।
প্রায় ৫১ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণ মেটানোর জন্য রিজার্ভের ডলার বাঁচাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় শ্রীলঙ্কা সরকার। এরপর থেকেই দেশটিতে সংকট বাড়তে থাকে।
এসব সংকটের জন্য প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতিকে দায়ী করছেন বিক্ষোভকারীরা।