বাংলাদেশ ও বাঙালি সংস্কৃতির বিরোধিতাকারীদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
তিনি বলেছেন, পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী একসময় রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ করেছিল। যা ছিল বাঙালি সংস্কৃতির ওপর বড় আঘাত। তখন পাকিস্তানি শাসকদের এ অপশাসনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানায় বাঙালি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। দেশে মৌলবাদী চক্র আজও বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি মেনে নিতে পারেনি। তারা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই সংস্কৃতিবিরোধীদের বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ শিশু একাডেমি আয়োজিত একাডেমির অডিটোরিয়ামে বাংলা নববর্ষ ১৪২৯ উদযাপন উপলক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় উৎসব। এ উৎসব এখন বাংলাদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। বাঙালি দিনটিকে উদযাপন করে উৎসবের আমেজে এবং সবাই নতুন পোশাক পরে খুশিতে মেতে উঠে। এজন্যই পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব।
তিনি বলেন, আমাদের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষি, ব্যবসা, পার্বণসহ পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে বাংলা সালের ব্যবহার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বর্ষবরণ উৎসব উদযাপনের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম নববর্ষ ভাতা চালু করেছেন। যা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
‘বাঙালির আদর্শ ও চেতনা বুকে ধারণ করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে হবে’- শিশুদের উদ্দেশে বলেন ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মূ. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। স্বাগত বক্তব্য দেন শিশু একাডেমির মহাপরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বাঙালির মৌলিক সত্তা হলো বাংলা সন। বাংলা সনের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা, ফসল উৎপাদন ও সংস্কৃতির নিবিড় সম্পর্ক। যা আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্য।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান, অতিরিক্ত সচিব ড. মহিউদ্দীন আহমেদ, মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সচিব ফরিদা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব মো. মুহিবুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও অভিবাবকরা। আলোচনা পর্ব শেষে শিশুদের পরিবেশনায় ছিল পহেলা বৈশাখের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় ছড়া, কবিতা আবৃত্তি, গান ও নৃত্য, ও নাট্যে মুখর হয়ে উঠে মিলনায়তন।