সরকার বড় বেকাদায় আছে দাবি করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া অন্য কিছু দেখতে চায় না। এখন সরকার থেকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলা হচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য। বিএনপি যদি তাদের লক্ষ্যে অটুট থাকে তাহলে কাঙ্খিত ফলাফল আসবেই।বৃহস্পতিবার (৯জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত’ ভোটের অধিকার রক্ষায় আমাদের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।মান্না বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারি না। এটা পারে সরকার। এজন্য এমন একটি সরকার দরকার যে সরকার জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবে। বর্তমানে এমন একটি সরকার রয়েছে যারা ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। বিগত একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আমাদের আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা থাকা সত্বেও ফলাফল ঘরে আনতে পারিনি। কারণ বর্তমান সরকার রক্ষক হয়েও ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী আর প্রশাসন এক হয়ে নির্বাচন করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৮৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের লালদিঘীতে বলেছিলেন যারা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেঈমান। তারপরের দিনই তিনি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে আমরা ওই দলকে জাতীয় বেঈমান হিসেবেই জানি।সরকার দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে দাবি করে মান্না বলেন, এখন কোনো অঘটন ঘটলেই বলে নাশকতা। তারা উদোরপিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপায়। অন্যায় করে একজন, শাস্তি ভোগ করে আরেক জন। আমি দীর্ঘদিন ওই দলটিতে ছিলাম বিতৃষ্ণা চলে এসেছে। আমি দেখেছি, কি অন্যায়, কি অবিচার, কিভাবে একটি রাজনৈতিক দল ভাঙতে হয়, কিভাবে আন্দোলন বানচাল করতে হয়, সহ্য হয়নি। এরা শুধু মানুষকে কষ্ট দিতেই জানে। বুকের ভিতরে কষ্ট নিয়ে একা একা হেটে চলে এসেছি।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলন কিন্তু ব্যর্থ হয়নি। এ সরকার ভোট ডাকাতি করেছে এটাই আমাদের জয়। কারণ এরা যে দুর্নীতিবাজ, জালিমশাহী সরকার তা জনগণের কাছে চিহ্নিত করতে পেরেছি।মান্না বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একটি রাজনৈতিক দল। আমরা তাদের নেতৃত্বে আন্দোলন করতে চাই। এক্ষেত্রে সঠিক নেতৃত্ব প্রয়োজন। তারা ১৪বছর ক্ষমতার বাইরে। তারা এখন বলছে ক্রান্তিকাল চলছে। এই ক্রান্তিকালকে যদি আমরা ব্যবহার করতে না পারি তাহলে কাঙ্খিত ফলাফল ঘরে আনা যাবে না। বাংলাদেশে একটা বড় ধরণের গণঅভ্যুত্থান হতে পারে, যেটা আমরা না জানলেও সরকার জানে। সরকার গতকাল বুধবার হঠাৎ করে বড় একটা শোডাউন করেছে। কিন্তু এ ধরণের শোডাউন করে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না।
তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়াপরসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএল সাধারন সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের দপ্তর সম্পাদক শফিকুর রহমান শফিক, সংগঠনের সাধারন সম্পাদক রমজান আলী প্রমুখ।