জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বেপরোয়া আচরেণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন সরিষাবাড়ী উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকলাদার। তারা উপজেলার দুই সাংবাদিককে হত্যা ও পেশা ছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এরমধ্যে ফরিদ আহম্মেদ ২নং পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এবং সুমন চাকলাদার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা সরকারি চাল নিয়ে অনিয়ম, মাদকের সাথে সম্পৃক্ততা ও বখাটে যুবকদের নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে আসছেন।
এদিকে সাংবাদিকদের হুমকির প্রতিবাদে ওই দুই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বুধবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। এসময় তারা সাময়িকভাবে পৌরসভার সংবাদ বর্জন করেন।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা পেশাগত কাজে সরিষাবাড়ী পৌরসভায় যান। এসময় পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন চাকলাদার দলবল নিয়ে পৌরসভায় ঢুকে কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আপত্তিকর মন্তব্য করতে থাকেন। সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং মাইটিভি ও ইত্তেফাকের উপজেলা প্রতিনিধি এ এস এম জুলফিকুর রহমানের দিকে তেড়ে গিয়ে সুমন চাকলাদার বলতে থাকেন, ‘আপনারা কীসের সাংবাদিক, কী কাজে এখানে এসেছেন, আমি কোন মাপের নেতা জানেন!’ এসময় নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি এসএম ইবরাহিম হোসাইন সুমন চাকলাদারের অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির ছবি তুলতে গেলে নানা অশালীন ভাষায় গালাগাল করতে করতে তিনি পৌরসভার দো’তলায় উঠে যান।
অপরদিকে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মেসার্স অবনি অনিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক ফরিদ আহম্মেদের বিরুদ্ধে দরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি দরের সরকারি চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শিহাব উদ্দিন আহমদ গত ৩০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) তার ডিলারশিপ বাতিল করেন। এ সংবাদটি একাত্তর টিভিতে প্রচারিত হলে ফরিদুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এমএ রউফ এবং একাত্তর টিভি ও কালের কন্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি মমিনুল ইসলাম কিসমত পেশাগত কাজে আরামনগর বাজার এলাকায় গেলে পথিমধ্যে যুবলীগ নেতা ফরিদ তাদের গতিরোধ করেন। কোনোকিছু বুঝে উঠার আগেই তিনি সাংবাদিক মমিনুল ইসলাম কিসমতকে বলতে থাকেন, ‘তুই বয়ড়া বাজারে আয়, তোর হাত-পা কেটে হাতে ধরিয়ে দেবো’। এসময় সাংবাদিক দু’জন তার এ কথার কারণ জানতে চাইলে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে করতে এলাকা ত্যাগ করেন।
এদিকে সাংবাদিকদের হুমকির প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবে প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। সরিষাবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি সোলায়মান হোসেন হরেকের সভাপতিত্বে প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন। তারা যুবলীগ নেতার আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]