মনসুর আলম খোকন,সাঁথিয়া(পাবনা)প্রতিনিধিঃ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ‘প্রফেসর আব্দুস সালাম মহিলা ক্যাডেট কলেজ’ নাম দিয়ে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে মাশুন্দিয়া ভবানীপুর কেজেবি ডিগ্রি কলেজের বিতর্কিত সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বিশ্বাসের নামে। তিনি কাশীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশে একটি ঘর ভাড়া করে নিজের নামে একটি ক্যাডেট কলেজের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। নাম দেয়া হয়েছে, প্রফেসর আব্দুস সালাম বিশ্বাস মহিলা ক্যাডেট কলেজ। তিনি প্রফেসর না হয়েও নামের আগে বসিয়েছেন প্রফেসর। এ বিষয়টি স্থানীয় শিক্ষিত লোকজনের নজরে আসলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে মহিলা ক্যাডেট কলেজ আছে মাত্র ৩টি। ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ, ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ, জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ। ক্যাডেট কলেজ সাধারণত কোন ব্যক্তির নামে হয় না। এদিকে সাইনবোর্ডে ইআইআইএন নম্বর লেখা আছে ১২৫৭৯৭। ওই ইআইআইএন নম্বর দিয়ে সার্চ দিলে পাবনা সুজানগর উপজেলার বিলগাজনা স্কুল এন্ড কলেজের নাম আসে। পার্শ্ববর্তী কাশিনাথপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, আমরা বেসরকারি কলেজের শিক্ষকরা সর্বোচ্চ সহকারী অধ্যাপক পর্যন্ত পদন্নোতি পাই। সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত হতে পারে কেবল সরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। একটি বেসরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক তার নামের আগে প্রফেসর বসিয়ে কৌশলে প্রতারণা করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, যে স্থানে কলেজটি করা হয়েছে, সেই স্থানটি মূলত বেড়া উপজেলার মধ্যে অথচ তিনি কৌশলে সাইনবোর্ডে সাঁথিয়া উপজেলার নাম দিয়েছেন। মাশুন্দিয়া-ভবানীপুর কে.জে.বি ডিগ্রি কলেজের ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাকডেটে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ, ওই কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বনাথ দত্ত প্রায় ৫ বছর ধরে ভারতে বসবাস করেও মাঝেমধ্যে বাংলাদেশে এসে বেতন নিয়ে চলে যেতেন তার সহযোগিতায়। এই অনৈতিক কাজে জাল স্বাক্ষর দিয়ে সহায়তা করার অভিযোগ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাপন ও বিধিকে অমান্য করে গভর্নিং বডিকে ভুল বুঝিয়ে একটানা তিন বছর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদ দখল করার অভিযোগসহ নানা অভিযোগের ভিক্তিতে বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিক প্রতিবেদনের পর দুদক তদন্ত করে। এরপর কলেজ গভর্নিং বডি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বিশ্বাসকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। এর পরও থেমে নেই তার অনিয়ম, দুর্নীর্তি। এবার ফের আলোচনা সমালোচনার মধ্যে অবৈধ ‘ প্রফেসর আব্দুস সালাম কাশিনাথপুর মহিলা ক্যাডেট কলেজ’ নাম দিয়ে প্রতারণা করায়। এ ব্যাপারে আব্দুস সালাম বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন সদুত্তোর না দিয়েই ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে বেড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার খবির উদ্দিন জানান, মূলত কলেজের বিষয় উপজেলা শিক্ষা অফিসের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। আর এ বিষয়টি আমার জানাও ছিলনা। আমি ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলে দেখি, কি করা যায়।বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহা. সবুর আলী বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা ছিলনা। আপনার মাধ্যমেই প্রথম শুনলাম। আমি খোঁজ নিয়ে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবো।