কানাইঘাট প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ
পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে কানাইঘাট প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক দৈনিক যুগভেরী পত্রিকার প্রতিনিধি মুমিন রশিদকে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে সীমান্ত এলাকার বাদশা বাজারে লাঞ্চিত করে ক্যামেরা ছিনতাইকারী কুখ্যাত চোরাকারবারী তোতা মিয়াকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপিএম জানান তোতা মিয়াকে আটক করতে তারা তৎপর রয়েছেন তার বাড়ীতে ইতি মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। সাংবাদিক সমাজকে গালিগালাজ ও প্রাননাশের হুমকি দাতা কয়েকটি মাদক ও ইয়াবা মামলার আসামী তোতা মিয়াকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবীতে গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টায় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবের সহ-সভাপতি আব্দুন নুরের সভাপতিত্বে সভায় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সহ ক্লাব নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় কর্মরত সাংবাদিকরা এতে উপস্থিত ছিলেন। সভায় দ্রুত সীমান্ত এলাকার চিহ্নি মাদক ব্যবাসীয় ও চোরাকারবারী তোতা মিয়াকে গ্রেফতার করে নির্ভয়ে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করার জন্য সিলেটের পুলিশ সুপার মোঃ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম সহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন কর্মরত সাংবাদিকরা। জানা যায় গত ২৭ জুলাই উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির সুনাতনপুঞ্জি গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের পুত্র তোতা মিয়ার ছোট ভাই আফতাব উদ্দিন পূবালী ব্যাংক কানাইঘাট শাখায় ৪৭ হাজার ৫’শ টাকার জাল নোট নিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। এ সংবাদ সিলেটের বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তোতা মিয়া স্থানীয় সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। সে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক সহ বিভিন্ন ভাবে সাংবাদিকদের হুমকি প্রদান করে। গত ১১ আগস্ট কানাইঘাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন ও দপ্তর সম্পাদক মুমিন রশিদ তোতা মিয়ার গ্রামের পাশের বাদশা বাজারে দুইপক্ষের সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে পেয়ে তোতা মিয়া গোটা সাংবাদিক সমাজকে তোলে ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও স্থানীয় কর্মরত সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান সহ প্রাননাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় সাংবাদিক মুমিন রশিদ বাদী হয়ে তোতা মিয়াকে আসামী করে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং-১৩ তাং-১৪/০৮/২১ ইং। অনুসন্ধানে জানা যায় তোতা মিয়া সীমান্ত এলাকার একজন চিহ্নিত চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ী সহ এলাকার নানা ধরনের আইনশৃংখলা বিরোধীয় ও অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত রয়েছে। এমনকি সীমান্তবর্তী পাহাড়ী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে সে। লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে তোতা মিয়া পাহাড়ী এলাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মাদক, জুয়া, জালটাকার ব্যবসা, জোর পূর্বক ভাবে জমি দখল বাদশা বাজার শহরের বাজারের পাশে একটি পাহাড়ী বাড়ীতে প্রতিদিন মদ, জুয়ার আসর বসিয়ে মাঝে মধ্যে নর্তকিদের এনে অশ্লীল গানের আসর বসায় সে ও তাহার সহযোগিরা। চোরাকারবারী তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি মামলা হয়েছে। এছাড়া অন্যান আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার সহ সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া চোরা চালানের সাথে থাকার দায় সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মামলা দায়ের করেন। অনকে মামলায় তোতা মিয়া কারবাস করেছেন। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ফেনসিডিল ও ভারতীয় মদ জব্দ করে তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে বিজিবি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৮, তাং-৭/২/১৯ইং। এর ৭ মাস যেতে না যেতেই একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ সহ ফের তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সুরইঘাট বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১৪, তাং-১১/৯/১৯ইং। এর পূর্বে ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারী তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কানাইঘাট থানায় মামলা হয়। সেদিনকার থানার মামলা নং-৬। পূর্বে সহ বর্তমানে প্রতিটি মামলার এজহারে সে অভিযুক্ত ছিল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন তোতা মিয়া ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্মের সাথে জড়িয়ে পড়েছে। সীমান্ত এলাকায় বেপরোয়া চোরা কারবারের সাথে জড়িত তোতা মিয়া রাতারাতি কোটিপতি হয়েছে। তার পরিবারের অনেকের বিরুদ্ধে চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার দায় মামলা রয়েছে। বর্তমানে তার ছোট ভাই আফতাব উদ্দিনকে প্রচুর জাল টাকা দিয়ে গ্রেফতারের পর ২দিনের পুলিশি রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ। সীমান্ত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারনে তার বিরুদ্ধে এলাকার কেউ কথা বলতে সাহস পায়নি। যার প্রমাণ স্বরূপ প্রকাশ্যে বাদশা বাজারে মানুষের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের প্রাঁণনাশের হুমকি দিয়ে লাঞ্চিত করে ক্যামেরা ছিনতাই করে তোতা বাহিনী। স্থানীয় আওয়ামীলীগের তৃর্ণমূল পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন ২০১৪ সালে হঠাৎ করে আওয়ামীলীগে আবির্ভাব ঘটে তোতা মিয়ার। সে ইউপি আওয়ামীলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে সুরইঘাট এলাকায় চোরাচালান সহ সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন ধরণের অপকর্ম চালিয়ে আওয়ামীলীগের ভাবমূর্তি মারাত্মক ভাবে ক্ষুন্ন করছে। এছাড়া তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান ও প্রাননাশের হুমকির ঘটনায় কানাইঘাটের কর্মরত সাংবাদিক প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।