দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক: বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এখন নানা চ্যালেঞ্জের মুখে। জনমানুষ আস্থা হারিয়েছে অনেক আগেই। এখন বলতে গেলে অস্তিত্ব সংকটে। ডিজিটাল জমানায় সাংবাদিকতা হরেক রকমের। এর কারণে প্রিন্ট মিডিয়া এমনিতেই প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। টিভি সাংবাদিকতা বাংলাদেশে শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রিত। সরকার লাইসেন্স দেয় বলে সত্য প্রকাশ বন্দী তাদের আদালতে। দু’ একটা ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলেও এজন্য কড়া মূল্য দিতে হয়। সরকার আসে, সরকার যায়। অব্যাহত থাকে একই ধারা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরো খারাপ হয়। ফলে টিভি সাংবাদিকতার সত্যিকার বিকাশ ঘটেনি বাংলাদেশে। সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্য এর জন্য অনেকখানি দায়ী। রাজনৈতিক বিভাজন সাংবাদিকতাকে এক বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর কিছুদিন কালোকে কালো বলার চেষ্টা ছিল। অল্পদিন পরেই হঠকারিতা যোগ হলো। এরপর থেকে সাংবাদিকতার নিয়ন্ত্রক হয়ে গেল সরকার। অসহায় আত্মসমর্পণ দেখে প্রয়াত সাংবাদিক গুরু ফয়েজ আহমেদ লিখেছিলেন, ‘সত্য বাবু মারা গেছেন’। গণতন্ত্রের চর্চা না থাকায় আজকের এই পরিস্থিতি। ৫৩ বছরের বাংলাদেশে নির্ভেজাল গণতন্ত্রের চর্চা কখনো হয়নি। শুরুতে কথায় কথায় চাকরি যাওয়ার প্রবণতা এতোটাই বেশি ছিল যে, গেটে নোটিশ দেখে সাংবাদিকরা অফিসে ঢুকতেন। একদলীয় শাসন, সেনা শাসন, জরুরি শাসন ও কর্তৃত্ববাদী শাসনে বাংলাদেশের বেশির ভাগ সময় কেটেছে। এখন আবার অন্তর্বর্তী শাসন। মাঝে-মধ্যে গণতান্ত্রিক শাসনের চর্চা হলেও মানসিকতার পরিবর্তন না হওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এক পর্যায়ে সাংবাদিকরা নিজেদের পরিচয় ভুলে গিয়েছিলেন। আগে দল। পরে সাংবাদিক। এতে করে সাংবাদিকদের আত্মপরিচয়টাই প্রশ্নের সন্মুখীন হয়। এজন্য এককভাবে শাসকদের দায়ী করা চলে না। আমরা নিজেরাই ‘প্রাপ্তির’ কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। এতে করে শাসকেরা দানবে পরিণত হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সাহসী হয়েছি। এখনো এই ধারা অব্যাহত।