যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আয়া পদে চাকরি দিতে চাওয়া হয়েছিল সাত লাখ টাকা। জমি বিক্রি ও উচ্চ সুদে ঋণ করে সে টাকা জোগাড় করেন বনগ্রামের রেশমা বেগম। রেশমা বেগমের অভিযোগ, সাত লাখ টাকা নিয়েও চাকরি দেওয়া হয়নি তাঁকে।এ ঘটনায় সোমবার (২৭ জুন) বিকালে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মানববন্ধন করেন।জানা গেছে, সম্প্রতি উপজেলার বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একজন আয়া, একজন অফিস সহায়ক ও একজন নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আয়া পদে আবেদন করেন বনগ্রামের দিনমজুর মাহাবুবুর রহমানের স্ত্রী রেশমা বেগম।এ ব্যাপারে রেশমা বেগম বলেন, ‘ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাশেম মোড়ল ও প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে আট লাখ টাকার বিনিময়ে আয়া পদে নিয়োগের মৌখিক চুক্তি হয়। এদিন তাঁদের হাতে নগদ দেড় লাখ টাকা তুলে দেন আমার স্বামী। ১০ দিন পর জমি বিক্রি করে আরো আড়াই লাখ টাকা দেওয়া হয় কমিটির নিকট। এই টাকা স্থানীয় কাটাখালি মসজিদের ভেতরে দেওয়া হয়। বাকি টাকা উচ্চ সুদে ঋণ ও স্বর্ণালংকারসহ গোয়ালের গরু, ধান বিক্রি করে পরিশোধ করা হয়। এখন জানতে পেরেছি অন্য এক নারীকে সাড়ে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সহায় সম্বল সবকিছু শেষ করেও আমার চাকরি হচ্ছে না। আমি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। এবং ওই পদে চাকরি ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করছি।’বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিরুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয়ের তিনটি শূন্য পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। রেশমা বেগমের অভিযোগ সত্য নয়। ম্যানেজিং কমিটি কোন অর্থনৈতিক লেনদেন করে থাকলেও আমার জানা নেই।এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম মোড়ল মুঠোফোনে জানান, রেশমা বেগমের অভিযোগ বানোয়াট। ওই পদের জন্য তাঁর নিকট হতে কোন টাকা নেওয়া হয়নি। একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।মানববন্ধন চলাকালে প্রেমবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার বাবুল আক্তার বলেন, বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। রেশমা বেগমের চাকরি দিতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারি বিধিমোতাবেক বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিনটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে। নিয়োগ দিতে ম্যানেজিং কমিটি অর্থ বাণিজ্য করছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]