পলাশ,সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চরাঞ্চলে মরিচ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন স্থানীয় কৃষকরা। দেশী প্রজাতির মরিচ বপনের পরিবর্তে তারা অধিক লাভের আশায় রোপন করছেন হাইব্রিড প্রজাতির মরিচের চারা। হাইব্রিড মরিচে খরচ ও পরিশ্রম দিগুন হলেও সঠিক পরিচর্যায় অধিক লাভের আশায় হাইব্রিড মরিচ চাষে বেশি আগ্রহী কৃষকরা।কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের বীর শোনপচা চরের কৃষক জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যম কে জানান, প্রতি বছরই প্রায় ৪-৫ বিঘা জমিতে মরিচের চাষ করতে হয়। আগে যখন আমরা হাইব্রিড মরিচ সম্পর্কে জানতাম না, তখন দেশীয় প্রজাতির মরিচ চাষেই আগ্রহ বেশি হতো। তবে গত দুই বছর হলো আমাদের এলাকার বেশিরভাগ কৃষক’ই দেশীয় প্রজাতির চেয়ে হাইব্রিড মরিচ চাষে খুব বেশি সচেতন হয়ে পড়েছেন।হাইব্রিড মরিচ চাষ ব্যয়বহুল হওয়ার পরও কেন কৃষকরা এটি চাষে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে?এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল আরও জানান, হাইব্রিড মরিচ চাষের মৌসুমে চারা রোপনের আগেই কিছু সার প্রয়োগ করতে হয়, হালচাষ ও মরিচের চারা ক্রয় বাবদ বিঘা প্রতি ৭-৮ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। চারার বৃদ্ধি ও মরিচের জোয়ার আসার সময়ে বিভিন্ন সার ও কীটনাশক ব্যবহারে শেষ পর্যন্ত বিঘা প্রতি খরচ হবে সর্বোচ্চ প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো। প্রতি বিঘা জমিতে বছরে ৩০ হাজার টাকা খরচ করলে বছর শেষে ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ হয়। যা দেশীয় প্রজাতির মরিচ চাষে লাভের প্রায় দ্বিগুণ। মূলত এ কারণেই হাইব্রিড মরিচ চাষে কৃষকরা বেশি আগ্রহী।পার্শ্ববর্তী বেড়াপাচবাড়িয়া চরের কৃষক কোরবান আলী বলেন, দেশী মরিচের চেয়ে হাইব্রিড মরিচে যেমন খরচ বেশি তেমনি ফলন ও লাভ দুটোই বেশি হয়ে থাকে। প্রতি হাটে কাঁচা মরিচ বিক্রি করে ক্রেতাদের টাটকা মরিচের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি কৃষকের দৈনন্দিন সংসারের চাহিদা মিটানো খুব সহজতর হয়। দেশী মরিচ চাষে তা হয় না।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মরিচ চাষের জন্য ৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি নির্ধারন করা হয়েছে। এরই মধ্যে চাষীরা মরিচ চাষ করায় লক্ষ্যমাত্রার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে গেছেন। কৃষি অফিস আরো জানায়, এর মধ্যে ২ হাজার হেক্টর জমিতে দেশীয় প্রজাতির মরিচ চাষ করা হয়েছে, আর হাইব্রিড মরিচ চাষ করা হয়েছে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ ৬০ ভাগ জমিতে দেশী মরিচের চাষ করা হলেও ৪০ ভাগ জমিতে চাষ করা হয়েছে হাইব্রিড জাতের মরিচ। গত বছরও হাইব্রিজ জাতের মরিচ চাষ এত ছিলোনা। গতবছর হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করা হয়েছিলো মাত্র ৬’শ হেক্টর জমিতে। ২০১৯ সালে মাত্র ১’শ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছিলো হাইব্রিড মরিচ। বর্তমানে এই হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ অধিকহারে বাড়ছে। সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, কৃষকরা সচারাচর লাভজনক ফসল বেশি চাষ করে থাকেন। হাইব্রিড মরিচে ফলন বেশি। পরিশ্রম ও খরচ বেশি হলেও সেদিকে না তাকিয়ে অধিক লাভের আশায় চাষীরা হাইব্রিড মরিচ চাষ করে থাকেন। একবার ফসলটির চারাগাছ রোপন করলে জমি থেকে বছর জুড়ে ফলন পাওয়া যায়। সেচ, নিড়ানী, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে জমি থেকে সাড়া বছর কাঁচা মরিচ পাওয়া যায়। এতে কৃষকরা লাভবান হন।
৪ views