পলাশ,সারিয়াকান্দি(বগুড়া)প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালী নদী খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী খনন কাজের সাথে যুক্ত হয়ে গত মাস খানেক ধরে নদীর ড্রেজিং কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বাঙালী ব্রীজ সংলগ্ন নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে এ খনন কাজ শুরু করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বাঙালী নদী দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী নদী। পঞ্চগড় জেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে হয়ে, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা জেলার কিছু অংশ দিয়ে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে হয়ে যমুনা নদীতে পৌঁছেছে। দেশের এ নদীটি এক কালে নৌ-যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলেও কয়েক বছর আগে থেকে পলি মাটি পরে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে আন্তঃ জেলা নৌ-পথ বন্ধ হয়েছে বহু আগে। এর পরেও বর্ষাকালে নদীটিতে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম যাওয়ার নৌ-পথ হলেও পলি মাটি পরে ভরট হওয়ার কারণে প্রায় ২৫ বছর হলে সেটিও বন্ধ রয়েছে। এখন বলা যায়, নৌ-পথটি সম্পূর্ণরূপে মরে গেছে। এদিকে সরকার নদী পথটিকে আন্তঃজেলা নৌ-পথ রূপ দিতে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। নদী পথকে বিভিন্ন রকমের নৌযান দিয়ে তিলোত্তমা করতে এরইমধ্যে খনন কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ভাটির অংশ সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে বছর দুয়েক আগে থেকে খনন কাজ চললেও বর্তমানে খনন কাজ চালানো হচ্ছে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা অংশে। সেনাবাহিনী সারিয়াকান্দি উপজেলার পৌর এলাকার বাঙালী ব্রীজ সংলগ্ন খনন কাজ শুরু করেছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, মরা নৌ-পথটিকে সচল করতে সিডিউল সময় ধরা হয়েছিলো তিন বছর। আগামী জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার কথা থাকলেও দেশে মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে মাঝ পথে ড্রেজিং কাজ থেমে যায়। যার জন্য আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না বলে প্রকৌশলীরা জানান। স্থানীয় আবদুল কাদের বলেন, আমরাতো ভাবিনি মরা বাঙালীকে খনন করে তিলোত্তমা নৌ-পথে পরিনত করা হবে। নদীটিতে সেনাবাহিনীর খনন কাজ দেখে আমাদের মনে আশা দানা বেঁধেছে।পান্নি উন্নয়ন বোর্ডের বগুড়া বিভাগের সারিয়াকান্দিস্থ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল রহমান তাসকিয়া বলেন, সর্বমোট ২ হাজার ৩’শ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ড্রেজিং কাজে ধরা হয়েছে ১৮’শ কোটি টাকা। বাদবাকী ৫’শ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে নদীটির তীর সংরক্ষণ কাজে। তারা সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী থেকে শুরু করে গাইবান্ধার কাটাখালী পর্যন্ত ২১৭ কিলোমিটির নৌ-পথ ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন করবেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সময় বাড়ানোর জন্য পান্নি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্চ মহলে আবেদন করা হবে। সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রাসেল মিয়া বলেন, এটি একটি সরকারী যুগান্তকারী পদক্ষেপ, কারণ নদী মাতৃক এই দেশে নৌ-পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহা-সড়কের উপর যানবাহনের ব্যাপক চাপ পড়েছে। এছাড়াও খরচ ও সময় অপচয় হচ্ছে কয়েকগুণ। উত্তারাঞ্চলের এই নদীটি পরিকল্পিত ড্রেজিং এর মাধ্যমে খনন করা হলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে উত্তাঞ্চলবাসীর জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। এ কাজে সহযোগীতা করার জন্য অনেক আগেই আমাদেরকে চিঠির মারফত জানানো হয়েছে।
৫ views