সেলিম রেজা (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দ্বারা অবরুদ্ধ হয়ে থাকা রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী ও অন্যান্য শিক্ষকরা অবশেষে মধ্যরাতে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিক্ষুব্ধ ও ক্ষুব্ধ হয়ে পরে।জানা যায়, ১৪ জন ছাত্রের চুল কাটার ঘটনায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানা বাতেনের স্থায়ী বহিস্কার দাবিতে দ্বিতীয় দফায় শুক্রবার রাত থেকে আন্দোলন করছিল শিক্ষার্থীরা।শনিবার মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভে এসে রবিবার দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে একজন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘোষণা দেন শামীম নামের একজন শিক্ষার্থী। পরদিন রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করার জন্য বেশ কয়েকজন শিক্ষক বিসিকে অবস্থিত অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আসে, তার কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ সোহরাব আলী শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করার জন্য ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন।আলোচনার এক পর্যায়ে শামীম নামের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সবার উপস্থিতিতে কীটনাশক পান করেন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় মহাসড়কের দুই পশে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ জানজটের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষার্থীরা যাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ১ ঘন্টা পর সড়ক থেকে অবরোধ তুলে ফেলে, পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের দিকে যায় এবং সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।এরপর বিকাল পৌনে ৪টায় শিক্ষকদের নিয়ে রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী আবারো ক্যাম্পাসে এলে শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার সহ প্রায় ৪০ জন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারিকে অবরুদ্ধ করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরুদ্ধ রাখার ঘোষণা দেন।বিকাল ৪টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত প্রায় ৯ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকায় বেশ কয়েকজন শিক্ষক অসুস্থ্য হয়ে পরলে তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রীয়ার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে রাত আনুমানিক দেড়টায় শিক্ষকরা ছাত্রদের সাথে তর্ক করে ও বিক্ষুব্ধ হয়ে পরে।পরে ক্যাম্পাসে উত্তেজনার খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার উপ-পরিদর্শক এসআই রুবেল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে শাহজাদপুরে কর্মরত কয়েকজন সাংবাদিক ও পুলিশের হস্তক্ষেপে শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ রেজিস্ট্রার ও শিক্ষকদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি দেয়।এসময় শিক্ষক রওশন আলম সাংবাদিকদের জানান, প্রথমে ছাত্রদের দাবির সাথে আমরা একাত্ম ছিলাম। পরে তারা আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং আমাদের সাথে থাকা ৩ জন নারী শিক্ষককেও তারা অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের আমরা অনেক অনুরোধ করেছিলাম সাথে থাকা ৩ জন নারী শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়ার জন্য কারণ তাদের ঘরে ছোট বাচ্চা আছে কিন্তু তারা এতো অমানবিক আচরণ করেছে যে তাদেরও যেতে দেয়নি।তিনি আরো জানান, বেশকয়েকজন ছাত্র শিক্ষকের গায়ে হাত তুলেছে এবং রেজিস্ট্রার স্যারকে তুই তুকারি করে কথা বলেছে। এরকম মানুষ আমাদের ছাত্র হতে পারে না এবং আমরাও তাদের শিক্ষক হওয়ার যোগ্য নই,এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ সোহরাব আলী বলেন, আমি এসেছিলাম ভিসি মহোদয়ের সিদ্ধান্ত তাদের জানাতে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংকট কাটিয়ে অভিযু্ক্ত শিক্ষক ফারহানা বাতেনের বিষয়ে সিদ্ধন্ত নেওয়া হবে।তারা আমার কথার কোন কর্ণপাত করেনি, পরে শিক্ষা মন্ত্রী ড. দিপু মনি তাদের সাথে মোবাইলে কথা বলার জন্য সংযু্ক্ত ছিল তারা তার সাথেও কথা বলতে রাজি হয়নি, তারা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে প্রায় ১০ ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে।
০ views