সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ”এই শ্লোগান নিয়ে মহান জাতীয় সংসদে উত্থাপিত অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল ২০২৩ প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক,ট্যাংকলড়ি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি নং- চট্র-২৬২২)আয়োজনে শহরের মল্লিকপুর এলাকা হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) শেখ মহি উদ্দিনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক,ট্যাংকলড়ি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদ ও সাধারন সম্পাদক মো. নুর উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাতকের গোবিন্দগঞ্জের শ্রমিক থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন এলাকা হতে শত শত শ্রমিকরা অংশ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এসে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন,সুনামগঞ্জ জেলা ট্রাক,ট্যাংকলড়ি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদ,সাধারন সম্পাদক মো. নুর উদ্দিন,দপ্তর সম্পাদক মো. তাজ উদ্দিন,কোষাধ্যক্ষ মো. রাজা মিয়া,সদর শাখার সভাপতি মো. মছব্বির মিয়া,সাধারন সম্পাদক মো. আব্দুস জাহান,মো. ফরিদ,গোপাল,সুমন,মাছুম,স্বপন,বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মো. শাহজাহান মিয়া,সহ সভাপতি হোসেন,সাধারন সম্পাদক মধু মিয়া,কাশিয়ার বাবুল,ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ সিএনজি চালিত অট্রোরিক্সা ও অট্রো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের রেজি-নং চট্র-১৬৯৩) শাখার সভাপতি সোহেল আহমদ,সাধারন সম্পাদক সাজিদুল ইসলামসহ কমিটিরসহ সকল কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নেতৃবৃন্দরা বলেন,শ্রমিকরা রক্তপ্রবাহের মতো পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখে। শ্রমিকরা ছাড়া শিল্প,কৃষি ও সেবা খাতের কোন খাতেরই সচলতা ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিনিয়ত শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা। আইনে যে নিয়োগপত্র,পরিচয়পত্র,কর্মঘন্টার উল্লেখ আছে,সেই অধিকার থেকে পরিবহন শ্রমিকরা বঞ্চিত। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দূরপাল্লার গাড়িতে দুইজন চালক নিয়োগসহ পরিবহন শ্রমিকদের সুরক্ষা সংক্রান্ত ঘোষনার এখনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে আরো বলেন,সড়কে অব্যবস্থাপনা দূর না করে র্দূঘটনার সকল দায় পরিবহন শ্রমিকদের উপর চাপানো এবং শ্রমিকদেও দানব আখ্যা নিয়ে জনগনের কাছে হেয় করার সংস্কৃতি চালু হয়ে হয়ে দাবী করেন। অথচ যেকোন র্দূযোগ ও রাজনৈতিক সংঘাতের সময় শ্রমিক ও চালকরা জীবনের ঝুকি নিয়ে পরিবহণ পরিচালনা করে জনগনের সেবা দিয়ে থাকেন। নানান অজুহাতে শ্রমিকদেরকে আসামীর কাঠগঁড়ায় দাড় করিয়ে শাস্তি দেয়ার মানসিকতা থেকে একের পর এক আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে এর উদাহরণ সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮। ফলে পরিবহন খাতে শ্রমিকদের মধ্যে আতংঙ্ক তৈরী করে তাদের উপর কাজের চাপ নিপীড়ন ও বঞ্চনা আরো বাড়লে ও প্রতিবাদ করার সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছেন। অথচ শ্রম আইনের ২০৯ ধারায় শিল্প বিরোধ উত্থাপন,২১০ ধারায় শিল্প বিরোধ নিস্পত্তির বিধান আছে কিন্তু বিরোধ নিস্পত্তির সকল পথ বন্ধ হয়ে গেলে ২১১ ধারায় ধর্মঘটের বিধান ও পদ্ধতির উল্লেখ আছে। এই বিল আইনে পরিণত হলে শ্রম আইনে ধর্মঘটের যতটুকু আইনসংগত অধিকার আছে সেটাও বাস্তবে কেড়ে নেওয়া হবে বলে মনে করেন তারা। উল্লেখ্য ১৯৫২ সালের অ্যাক্ট্র এবং ১৯৫৮ সালের অর্ডিন্যান্সকে সময়োপযোগী করে কতিপয় চাকুরি ও শ্রেণরি চাকুরী সেবা অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে ঘোষনা এই বিল সংসদে উত্থাপন করা হচ্ছে। এই আইন স্বাধীন দেশে কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য বলে মনে করছেন না শ্রমিক নেতারা। অবিলম্বে এই সমস্তকালাকানুন আইন বাতিল করতে সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট জোর দাবী জানান। পরে শ্রমিক নেতারা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) শেখ মহি উদ্দিনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।