এস,এম শাহাদৎ হোসাইন গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক শিরোমণিঃ গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের জেলা সমূহের মানুষের স্বপ্নের তিস্তা সেতুর নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সেতুর ৭নং পিলারের পাইলিং ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নির্মাণ কাজ সার্বক্ষণিক পরিদর্শন করছেন উপজেলা প্রকৌশলী, উপসহকারী প্রকৌশলীসহ প্রকল্পে নিয়োজিত অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রতিদিন উৎসক জনতা সেতুর নির্মাণ কাজ দেখার জন্য ভীড় করছে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) গত বছরের ৬ জুলাই গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর-চিলমারি উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগকারি সড়কে তিস্তা নদীর উপর ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়। ২০১২ সালে তিস্তা সেতু নির্মাণ আলোর মুখ দেখতে শুরু করে। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই তিস্তা নদীর উপর এই সেতু নির্মাণের কাজের সুচনা হয়। সিডিউল মোতাবেক নির্মাণ কাজ এগিয়ে গেলে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে সেতুটির নির্মাণ কাজ স¤পন্ন হবে। জানা যায়, ২০১৮ সালে উপজেলার হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু নির্মাণসহ সংযোগ সড়কের কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয়ের জটিলতার কারণে সংযোগ সড়কের ভুমি অধিগ্রহণ এবং সেতু নির্মাণের কাজ বিলম্বিত হয়। এমতাবস্থায় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তব্য উপস্থাপন করলে গত বছরের ৬ জুলাই একনেক অনুমোদন দেন এবং কাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধার সার্কিট হাউজে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হরিপুরÑচিলমারি তিস্তা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন। হরিপুর সেতু সংলগ্ন এলাকা হতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা শহর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধটি সেতুর সংযোগ সড়কে রূপান্তরের কাজ এবং সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের কাজ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। কুড়িগ্রামের চিলমারি, রাজীবপুর ও রৌমারী এবং গাইবান্ধাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল হরিপুর চিলমারি তিস্তা সেতুর। ৭৩০ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দে নির্মাণ করা হবে তিস্তা সেতু। এর মধ্যে ২৭৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হবে। সড়ক নির্মাণে ব্যয় হবে ১০ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা, নদী শাসনে ৮ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা এবং জমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে ৬ কোটি টাকা। সেতুটিতে পিলার থাকবে ৩০টি। এর মধ্যে ২৮টি পিলার থাকবে নদীর ভিতরে অংশে এবং ২টি পিলার থাকবে বাহিরের অংশে। সেতুর উভয়পাশে নদী শাসন করা হবে ৩.১৫ কিলোমিটার করে। সেতুর উভয় পাশে সড়ক নির্মাণ করা হবে ৫৭. ৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে চিলমারি মাটিকাটা মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট থেকে হরিপুর সেতু পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। চিলমারী অংশে একসেস সড়ক সেতু থেকে কাশিম বাজার পর্যন্ত ৫.৩ কিলোমিটার এবং সাদুল্লাপুর ধাপেরহাট থেকে হরিপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার।