এস,এম শাহাদৎ হোসাইন গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সরকারি ভাতা ভোগীদের টাকা নিজস্ব হিসাব নম্বরে না গিয়ে অন্যের হিসাব নম্বরে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় উপজেলার অসচ্ছল বয়স্ক, বিধবাও প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতদরিদ্র মানুষ। চুক্তিবদ্ধ ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ কর্তৃপক্ষ ও সমাজসেবা অফিসে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে এমনটা হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। তবে সমাজসেবা অফিস দুষছেন নগদকে আর নগদ দুষছেন সমাজসেবা অফিসকে। কি কারণে আর কার কারণে হয়েছে তা দেখার বিষয় না। দ্রুত সমাধান করা না হলে সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হবেন কয়েক হাজার সুবিধাভোগী। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় সরকার প্রদত্ত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় অসচ্ছল বয়স্ক,বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত মোট হতদরিদ্রের সংখ্যা ৪৩ হাজার ২শত ১ জন। এর মধ্যে বয়স্ক ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ২৩ হাজার ৫শত ৫৬ জন, বিধবা ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ১২ হাজার ৩শত ৬০ জন ও প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ৭ হাজার ২শত ৮৫ জন। ভাতাভোগীরা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে নগদ অ্যাকাউন্ট করেছি। তাতে যে মোবাইল নম্বর দিয়ে ছিলাম সে নম্বরে টাকা আসেনি। শুনেছি অজানা অন্য কোনো নম্বরে টাকা চলে গেছে। তারা এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান। সুফিয়া খাতুনের বলেন, বয়স্ক ভাতার টাকা পেতে মোবাইল নম্বর ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে নগদ অ্যাকাউন্ট খুলেলেছি। তার সাথের অনেকেই টাকা পেয়েছেন। তিনি না পাওয়ায় সমাজসেবা অফিসে এসে জানতে পান টাকা অন্য মোবাইলে চলে গেছে। উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের সূর্বণদহ গ্রামের বয়স্ক ভাতাভোগী আজহার আলী বলেন, আমি নগদ একাউন্ট হিসেবে ০১৭৮৮-৪৫০৬০৭ নম্বর দিয়েছি। কিন্তু আমার ভাতার টাকা ০১৭৫৯-০২৭০৪৩ নম্বরে চলে গেছে। একই এলাকার ফমিনা বেওয়া বলেন নগদের লোক ভাতা বইয়ের উপর লিখে দিয়েছেন ০১৭০১-৯২৫৪৫৩ এ নম্বরটি। অফিসে এসে জানলাম টাকা ০১৬২৩-৬৫৭৯৫৭ নম্বরে চলে গেছে। নম্বরটি এখন বন্ধ রয়েছে। তারাপুর ইউনিয়নের মোজাহার আলী বলেন, আমার বয়স্ক ভাতার কার্ড হয়েছে। কিন্তু টাকা পাচ্ছি না। দু’মাস থেকে অফিসে ঘুরছি। কেই কিছু বলছেন না। আসি আর ঘুরে যাই। ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ গাইবান্ধার সুপারভাইজার একরামুল হক বলেন, এতোবেশি ভুল হয়নি। তবে দু’একজন অভিযোগ নিয়ে অফিসে আসেন এবং তাদের নম্বর আমরা সংশোধন করে দিচ্ছি।ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ গাইবান্ধা জেলা টেরিটরি কর্মকর্তা আসিফ বলেণ, সমাজসেবা অফিস থেকে যে মোবাইল নম্বরগুলো আমাদের দেয়া হয়েছে সে সকল নম্বরেই আমরা কাজ করেছি। কাজেই আমাদের দোষ দেয়ার সুযোগ নেই সমাজসেবা অফিসের।এটি তারাই করেছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, এ ধরণের সমস্যা ৩য় কিস্তির ৭৮০ জন এবং নতুন করে এপর্যন্ত শতাধিক ভাতা ভোগীর নাম পাওয়া গেছে। আর এ সমস্যার জন্য তিনি নগদ কেই প্রধান দায়ী করে বলেন, আমার অফিস থেকেও কিছু সমস্যা হতে পারে। তবে দ্রুত বিষয়টি সমাধানে কাজ করছি। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, এ ধরণের সমস্যার কথা শুনছি এবং আমার কাছে কয়েকটি অভিযোগও এসেছে। তা খতিয়ে দেখছি। যাদের সমস্যা হয়েছে তারা যেন আবেদন করেন। আবেদনে যেন তার মোবাইল নম্বর কোনটি এবং কোন নম্বরে টাকা গিয়েছে বিষয়টি ¯পষ্ট থাকে। তাহলে সহজেই ব্যবস্থা নিতে পারবো।