স্রোত নিয়ন্ত্রণে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এলে পদ্মায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফের ফেরি চলাচল শুরু করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা জানান। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাই-কমিশনার বিনয় জর্জ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পদ্মায় অস্বাভাবিক পানি বেড়ে তীব্র স্রোত দেখা দেয়ায় গত ১৮ আগস্ট থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ। এর আগে পদ্মা সেতুতে পাঁচ দফা ফেরির ধাক্কা লাগে।
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে কবে থেকে ফেরি চালু হবে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাওয়ায় এখনো ফোর নট কারেন্ট (৪ নটিক্যাল মাইল বেগে স্রোত) চলছে, এর নিচে এলে তখন এটা আমরা চালু করব। এখন পানির প্রবাহ বাড়ছে। আজকেও খবর নিয়েছি অতিরিক্ত পানির প্রবাহ আছে।
তিনি বলেন, এ অবস্থায় হয়তো মাওয়া থেকে বাংলাবাজার যাওয়ায় অসুবিধা নেই, কিন্তু ফেরাটা খুব সমস্যা। ঝুঁকিটা আমরা নিতে চাচ্ছি না স্রোতের মধ্যে। গত বছর যখন ফেরিগুলো চলেছে তখন স্প্যানগুলো বসানো ছিল না। এখন একটা সুনির্দিষ্ট পকেটের মধ্য দিয়ে ফেরিগুলো চালাতে হয়। কারণ সব স্প্যান বসে গেছে, পদ্মা সেতু অলমোস্ট রেডি আছে বলা যায়। এমন অবস্থায় যখন ঘূর্ণায়নগুলো যখন শুরু হয় তখন কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করাটা কঠিন হয়ে যায়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু কয়েকটা ঘটনা ঘটে গেছে। এই ঘটনাগুলোর কারণে আমরা যতটুকু তাদের উদাসীনতা ও কর্তব্যে অবহেলা ছিল সেজন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছি। কিন্তু তারপরও যেহেতু জনগণের মধ্যে এ বিষয়ে বিরূপ একটি প্রতিক্রিয়া দেখেছি এবং যেটার ব্যাপারে সবাই তাদের মতামত দিয়েছেন। সেই কারণে বলেছি, এ ঘটনাগুলো ঘটার মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে আর আতঙ্কের মধ্যে রাখতে চাই না।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু এমন একটি সেনসেটিভ জায়গায় চলে গেছে যে, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ সব থেকে আপন স্থাপনা মনে করে পদ্মা সেতুকে। নিজের বাড়িঘর থেকেও পদ্মা সেতুকে মনে করে এটি আমার আপন। এটিই বাংলাদেশ। কাজেই এই জায়গাটায় আমরা সতর্ক আছি।
ফেরি বন্ধ থাকায় মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। তারপরেও আমরা বলেছি পানির এই স্রোতটা কমে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা ফেরি চলাচলটা বন্ধ রাখছি।
বিকল্প ফেরিঘাট চালুর বিষয়ে খালিদ মাহমুদ বলেন, বিকল্প ফেরিঘাট আমরা মাঝিরকান্দিতে তৈরি করেছি। কিন্তু ১৩ নম্বর পিলারের ওখানে পলি জমে গেছে, বালু জমে গেছে, সেখানে ফেরি চলাচল সম্ভব না। আমরা দু-বার ট্রায়াল দিতে গিয়েও সেটি সম্ভব হয়নি, সেটা ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিলাম, পানির স্রোতের কারণে ড্রেজার টিকতে পারেনি। ড্রেজার নিতে গিয়ে আরেকটা ঝামেলা যদি হয়ে যায়। তাই এই মুহূর্তে আমরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছি না।
ডেপুটি হাই কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাদের সঙ্গে স্থল ও নৌবন্দর আছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা পোর্টে ট্রানজিট ব্যবহার করবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। স্থল বন্দরে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে কী কী কাজ করতে পারি, কী কাজ চলছে সেগুলোও আমরা শেয়ার করলাম। চট্টগ্রাম থেকে ট্রায়াল হয়েছিল সেটি বন্ধ আছে।
তিনি আরও বলেন, রোডস ও কাস্টমসের বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে, সিদ্ধান্তও হয়ে গেছে। সামনের মাসে হয়তো দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়গুলোর সমাধান হবে। এর বাইরেও এবার আইএমওতে (ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন) সি-ক্যাটাগরিতে আমরা নির্বাচন করব। সে বিষয়টি আমরা অবহিত করেছি। তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন বলে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]