মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জ শহরে দিন দিন বাড়ছে পথশিশুর সংখ্যা। ৮ থেকে ১২ বছরের এসব শিশু ভিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি আসক্ত হচ্ছে মরণনেশা ‘ড্যান্ডি’তে। দিবালোকে চোখের সামনেই তারা এ নেশায় আসক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে তাদের ভবিষ্যত অন্ধকারে যাচ্ছে। শহর ও আশ-পাশ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এর ব্যাপকতা। শহরের এক শ্রেণির রং ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায়
কোমলমতি শিশুদের কাছে বিক্রি করছে ড্যান্ডি নাম এ মরণ নেশা। ফলে স্কুল পড়–য়া ও পথশিশুরা এ নেশায় আসক্ত হচ্চে। বর্তমানে শহরের পথশিশুরা সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। শহরের আনাচে-কানাচে প্রকাশ্যেই চলে তাদের এ নেশা গ্রহণ। তবে এ বিষয়ে নেই কোন উদ্যোগ। কথা হয় পথ শিশু ফাতেমার সাথে। ১০ বছর বয়সী ফাতেমা শহরে প্রকাশ্যেই গ্রহণ করছে ড্যান্ডি। কেন সে ড্যান্ডি খায় জানতে চাইলে সে বলে, ‘পেটে ক্ষুধা লাগলে ড্যান্ডি খাই’।শহরের পথে-ঘাটে জীবন কাটে ফাতেমার। পিতা নেই, দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন তার মা। ৪ ভাই-বোনের মধ্যে ১ জন নিখোঁজ। আরেকজন চলে গেছে অন্যত্র। ছোট ভাইকে নিয়ে শহর ঘুরে বেড়ায় সে। পথচারীদের কাছে চেয়ে জুটে খাবার। বেশির ভাগ সময় উপুস থাকতে হয় তাদের। ঘুমানোর জায়গা না থাকায় বিভিন্ন দোকানের বারান্দায় একমাত্র ভরসা। ভিক্ষার পাশাপাশি মরণনেশা ড্যান্ডি গ্রহন করে। তার কাছে ড্যান্ডি গ্রহনের নির্ধারিত কোন সময় নেই। যখন ইচ্ছে হয়, তখনই সে ড্যান্ডি নেয়।
শুধু ফাতেমা নয়। আরও অনেক পথশিশু চোখে পড়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে। বেশির ভাগ দেখা যায় সরকারি কলেজের সামনে। তাদের আচরণে প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়ে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।এ বিষয়ে সুজনের সভাপতি অ্যাড. ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজন জানান, এসব পথশিশুদের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার। এ ব্যাপারে দায়িত্ব এড়িয়ে চলছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো। তাদের ব্যাপারে দ্রæত পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আরো অনেকের জীবন এভাবেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীস দাশ জানান, ড্যান্ডি’র প্রভাবে ঝিমুনি, ক্ষুধামন্দা, শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। পাশাপাশি আক্রান্ত হয় ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ শরীরের নানা অঙ্গ। ফলে জীবন হারানোর শঙ্কা রয়েছে।হবিগঞ্জ সমাজসেবার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন বলেন, ‘পথশিশুদের পুনর্বাসনে কাজ করছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এসব শিশুদের ব্যাপারেও খোঁজ নেয়া হচ্ছে’।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]