একে রীতিমতো পাগলামি ছাড়া আর কি-ই বা বলা যায়? শেষের দিকের ১৩ মিনিট, আর এতটুক সময়ের মধ্যেই কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে থাকা দর্শকরা দেখল ৪টি গোল। যার মধ্যে নিজেরই আবার ৩টি। সেই সুবাদে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১২০ বছর পর টানা তিন জয় পেল লেস্টার সিটি।
সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে অপরাজিত থাকার সুখস্মৃতি নিয়ে ঘরের মাঠে গতকাল শনিবার খেলতে নেমেছিল লেস্টার। ব্রেন্ডন রজার্সের অধীনে ফক্সরা এখন দারুণ ফুটবল খেলে। তবে প্রতিপক্ষ তো আরও শক্তিশালী। এ মৌসুমে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে ভিড়িয়ে তারকাখচিত দলে পরিণত হয়েছে ইউনাইটেড। তবুও লেস্টারের কাছে রেড ডেভিলসদের কাল হারতে হল ৪-২ গোলে।
প্রথমার্ধে ম্যাচে গোল হয়েছিল মাত্র দুটি। ইউনাইটেডের তরুণ তুর্কি গ্রিন মেসনউড ম্যাচের ১৯ মিনিটেই ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করে অতিথিদের এগিয়ে নেন। মিনিট দশেক পর স্বাগতিকদের সমতায় ফেরানো ইয়োরি তিয়েলসমানের গোলটি তো কম যায় না। ম্যানইউ ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুইয়ারের ভুলে বল পেয়ে যান কেলেচি ইহেয়ানাচো। তার পাস থেকে তিয়েলসমানের প্রথম স্পর্শের (ফার্স্ট টাচ) শট বাঁক খেয়ে ঢুকে যায় জালে।
আক্রমণভাগে কাল লেস্টার-ইউনাইটেডের ফুটবলাররা ছিলেন অনবদ্য। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বল একবার এই প্রান্তে, তো পরক্ষণেই অপর প্রান্তে। তবে হচ্ছিল না শুধু গোল। সেই খরা কাটে কাগলার সয়ুনচুর গোলে। ৭৮ মিনিটে কর্নার থেকে জটলার মধ্যে পাওয়া বল জালে পাঠিয়ে স্বাগতিক সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটান এই ডিফেন্ডার।
যদিও সেই খুশি স্থায়ী হয় মাত্র তিন মিনিট। মৌসুমে প্রথমবার খেলতে নেমেই দারুণ এক গোল করেন মার্কোস র্যাশফোর্ড। সেই গোলে যখন এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার প্রহর গুনছিল ইউনাইটেড সমর্থকরা, তখনই তাদের বুকে শেলের মতো এসে বেঁধে জেমি ভার্ডির গোল। র্যাশফোর্ডের গোলের রেশ না কাটতেই আয়োজে পেরেজের সহায়তায় নিখুঁত ফিনিশিংয়ে লেস্টারকে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে নেন ভার্ডি।
আবারও ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় থাকায় ইউনাইটেডের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন প্যাটসন ডাকা। ইনজুরি সময়ে ফ্রি-কিক থেকে গোললাইনের কাছেই বল পেয়ে যান তিনি। কাছের পোস্ট থেকে জাল খুঁজে নিতে বিন্দুমাত্র কষ্ট হয়নি তার। ফলে ৩০ ম্যাচ পর পরের মাঠে হারের তেঁতো স্বাদ পেতে হয় রেড ডেভিলসদের।
একই রাতে একের পর এক রূপকথা লিখে চলা ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে ঘামই ঝরাতে হয়েছে চেলসিকে। প্রথমার্ধে করা বেন চিলওয়েলের একমাত্র গোল তিন পয়েন্ট এনে দেয় ব্লুজদের। তবে এই জয়ে কম কৃতিত্ব নেই দলটির গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডিরও। গ্লাভস হাতে এদিন দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। ব্রেন্টফোর্ড ফুটবলারদের গোলমুখে রাখা ৭টি শট বিশ্বস্ত হাতে রুখে দিয়ে তিনি বনে যান নায়ক।
জয়টা কষ্টে এলেও, তাতে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পেরেছে চেলসি। ৮ ম্যাচ শেষে এখন তাদের পয়েন্ট ১৯। তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা লিভারপুলের পয়েন্ট ১৮। ১৭ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ম্যানচেস্টার সিটি। ওদিকে, লেস্টারের কাছে হেরে পয়েন্ট টেবিলের পাঁচে নেমে গেছে ম্যানইউ (১৪ পয়েন্ট)। লেস্টার ১১ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১১তম স্থানেই!
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]