সবুজ ভদ্র, বিশেষ প্রতিনিধি, চাঁদপুর: চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ এলাকায় সহকর্মীকে এসিড দিয়ে শরীর ঝলসে দেওয়ার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. কামাল হোসেন ওরফে জুতা কামালকে ২৪ বছর পর গত শুক্রবার গ্রেফতার করেছেন র্যাব-৭।
গত ১ অক্টোবর ২০২২ খ্রি. শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৭ এর সিও লেফটেন্যান্ট কর্ণেল এম এ ইউসুফ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি মো. কামাল হোসেন ওরফে জুতা কামাল ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের কাউনিয়া এলাকার রাজ্জাক পাটোয়ারী বাড়ীর রসুল করিমের ছেলে।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেনের নেতৃত্বে, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ মন্ডল এর সার্বিক তত্বাবধানে এস.আই মো. একরামুল হক ও এ.এস.আই মো. আমজাদ হোসেনসহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ চট্রগ্রামের র্যাব কার্যালয় থেকে ১ অক্টোবর শনিবার ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে কামালকে সোপর্দ করে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন জানান, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে র্যাব-৭ এর সহায়তায় আটক করে ২রা অক্টোবর আদালতে প্রেরন করা হয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ জাকারিয়া নামে কোরআনের একজন হাফেজ পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হতে আগ্রাবাদ এলাকায় দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ের ফ্রিজ মেরামতের দোকানে কাজ নেন। ওই দোকানে আসামি কামালও কাজ করতেন। জাকারিয়ার কাজে সবাই খুশি থাকায় কামাল জাকারিয়ার প্রতি তার ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন বিষয়ে জাকারিয়ার সঙ্গে কামালের তর্ক-বিতর্ক ও ঝগড়া হতো। একপর্যায়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এসিড দিয়ে জাকারিয়ার চোখে, মুখে, বুকে, হাতে ঝলসে যায়। এসিড নিক্ষেপের পরও মৃত্যু নিশ্চিত করতে কামাল দিয়াশলাই দিয়ে জাকারিয়ার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান।
পরে ডবলংমুরিং থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জাকারিয়াকে মৃত মনে করে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর ডিউটিরত প্রহরী জাকারিয়ার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে লক্ষ্য করলে তাকে দ্রুত পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে জীবনে বাঁচলেও জাকারিয়ার এক চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়, চোখের পাপড়ি ঝলসে যায় এবং মুখে, বুকে ও হাতে অ্যাসিডে ঝলসে যায়। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর জাকারিয়ার মোটামুটি সুস্থ হয়ে সৌদি আরব চলে যান।
ওই ঘটনার পর ১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর জাকারিয়ার বাবা মোহাম্মদ ইউনুস মিয়া বাদী হয়ে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত আসামি মো. কামালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]