নিরেন দাস,জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় মসজিদের ইমাম হত্যায় জড়িত থাকায় ১৩ দিনের মাথায় রহস্য উদঘাটন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রহস্য উদঘাটনে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় শাহিনুর রহমান শাহীন (৩৩) নামে একজন কে আটক করেছে (পিবিআই)।বৃহস্পতিবার (২৩ শে জুন) দুপুরে পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।আটককৃত শাহিনুর রহমান শাহীন নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল গ্রামের নঈম উদ্দিনের ছেলে। হত্যাকাণ্ডের শিকার মসজিদের ইমাম মহসীন আলী(২৬)জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেলগাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। এ হত্যা কাণ্ড নিয়ে দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আলোচিত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো।পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, এক বছর আগে শাহীনের সাথে তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা শাকিলার সংসার ভেঙে যায়। তাদের ১২ বছরের সংসার জীবনে ওয়াসিফা নামে একটি কন্যাসন্তান ছিলো।সেই সন্তান শাহীনের কাছে থাকে। তাদের কন্যা স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের পর গত ৪ মাস আগে শাকিলা মসজিদের ইমাম মহসীনকে বিয়ে করেন। শাহীনের ধারণা মহসীনের সাথে পরকীয়ার কারণে তাদের দীর্ঘদিনের সুখের সংসার ভেঙে যায়।এদিকে তার সন্তান ওয়াসিফার উপবৃত্তির জন্য মায়ের জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন হলে সেটি চেয়েও ব্যর্থ হন শাহীন। এ কারণে পরিচয় গোপন করে তিনি মহসীনের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে সখ্যতা গড়ে তোলেন।পুলিশ সুপার আরো জানান,আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে শাহীন উল্লেখ করেছেন গত ৭ জুন সন্ধ্যায় শাহীনুর মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে কালাই উপজেলার মোলামগাড়ি বাজারে ইমাম মহসীনের সাথে দেখা করেন। সেখানে দুইজনে চা পান করেন এবং রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মহসীনকে নিয়ে মোলামগাড়ি বাজার থেকে করিমপুরগামী রাস্তায় যান। রাস্তার ফাঁকা জায়গায় পৌঁছে তিনি মহসীনকে নিজের পরিচয় দেন এবং তার স্ত্রী শাকিলাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে বলে দোষারোপ করেন। একপর্যায়ে তিনি ওয়াসিফার উপবৃত্তির জন্য শাকিলার জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে বলেন। মহসীন এতে অপারগতা প্রকাশ করলে শাহীন ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে লোহার পাত দিয়ে মহসীনের মাথায় আঘাত করে তাকে হত্যা করেন। পরে তার মরদেহ রাস্তার পাশে একটি ধানক্ষেতে ফেলে মোটরসাইকেল নিয়ে চলে যান। পরের দিন কালাই থানা পুলিশ ইমাম মহসীনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং নিহতের বাবা পরে মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।তিনি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধারের পর বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ছায়া তদন্ত শুরু করে। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার (২১ শে জুন) গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকার ছয়দানা হাজিরপুকুর এলাকা থেকে শাহীনকে আটক করলে পিবিআই’র জিজ্ঞাসাবাদে শাহীন ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে।