এভাবেই উপজেলার ২২ ইউনিয়নে চলছে প্রায় ১৫০ টি ড্রেজার । ড্রেজিং বন্ধে প্রশাসনের দুর্বল ভূমিকা নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানা গুঞ্জন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় , উপজেলার প্রায় ২২ ইউনিয়নের ৩০৮টি গ্রামের কোন না কোন স্থানে ড্রেজার ও ভেকু দিয়ে মাটি উত্তোলন করছেন। মাইলের পর মাইল পাইপ সংযোগ দিয়ে কৃষি জমির মাটি কেটে উজাড় করা হচ্ছে। ভেকুতে জমির টপ সয়েল ও ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে তিন ফসলি জমিগুলোকে ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীর গর্ত করা হচ্ছে। এতে আশ-পাশের ফসলী জমি ভেঙে তৈরি হচ্ছে জলাশয় ও ডোবা।
বাবুটি পাড়া ইউনিয়নের কৃষক অহেদ মীর, জুনাবআলী মিয়া, কাজী অলিউল্লাহ জানান,
“ গান্দ্রা ভূমি অফিসের অধীনে দৈয়ারা মৌজার মাইনকা বিলে একটানা ২ বছর কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তলণ করছেন ড্রেজার ব্যবসায়ী কাজী রাকিব ও মোশারফ। ওরা ৩০ শতক জায়গা ক্রয় করে ড্রেজিং শুরু করেন বর্তমানে ১২০ শতকে চলছে তাদের ড্রেজিং। আশেপাশের জমিগুলো ড্রেজিংয়ের গর্তে পড়ে যাওয়ায় কৃষকরা নাম মাত্র টাকায় জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয় । বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পাইনি। ”।
জনস্বার্থে রিটকারীর দেয়া তথ্যের সূত্রে জানা যায়, “মুরাদনগর উপজেলার কৃষি জমি রক্ষায় মাটি কাটার সকল প্রকার অবৈধ যন্ত্রপাতি ৬০দিনের মধ্যে জব্দ করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং এসিল্যান্ডকে রিট ১৪১০৮/২০২২ মোকাদ্দমায় নির্দেশ দেন মহামান্য হাইকোর্ট ”।
হাইকোর্ট নির্দেশনার ৫৫ দিন অতিবাহিত। এসময়ের মধ্যে ইউএনও – এসিল্যান্ড অফিস মিলে মোট ১৬টি ড্রেজার ও একটি ভেকু জব্দ করেছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বিশাল এ উপজেলায় দেদারসে চলছে ড্রেজার, ভেকু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর।
উল্লেখ্য – ৬০ দিনের মধ্যে মুরাদনগর উপজেলার সকল প্রকার অবৈধ মাটিকাটার যন্ত্রপাতি জব্দ করতে ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার ১২ দিনের পর কৃষক খোকন মিয়ার জমি থেকে ভেকু দিয়ে রাতে মাটি তুলে নিচ্ছিল এতে বাঁধা দেওয়ায় মাটি ব্যবসায়ীরা তাকে হত্যা করেন। এঘটনার পর উপজেলার কৃষকরা প্রাণ নাশের ভয়ে মাটি উত্তলণে বাঁধা বা অভিযোগ দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী বলেন, ড্রেজার বন্ধে অভিযান চলছে । আগামী দুই মাস আরো ব্যাপকভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে।