সারোয়ার হোসেন, তানোর উপজেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী : দিন যতই যাচ্ছে ততই যেন জমে উঠতে শুরু করেছে তানোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের গুছানো নির্বাচনী ভোটের মাঠ। আসন্ন ১৪ই ফেব্রুয়ারী তানোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ইমরুল হকের জন্য পৌরবাসীর দুয়ারে দুয়ারে একটি বারের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট ভিক্ষা চেয়ে হাটে বাজারে ও পাড়া মহল্লায় জনসংযোগ করছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না।
এছাড়াও নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে তানোর পৌরসভার মাঠে নেমেছেন উপজেলার সাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরাও। এতে করে মাঝ পথে ঝিমিয়ে পড়া নৌকার নির্বাচনী মাঠ হঠাৎ করে নৌকার পক্ষে পৌরবাসীর গণ আওয়াজ বদলে দিতে শুরু করেছে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া।
পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা ও জানা গেছে,১৪ই ফেব্রুয়ারী পৌরসভার নির্বাচনকে সামনে রেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের পক্ষ থেকে দুই রকমের নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা নিয়ে অনেকটা ধোয়াশার মধ্যে পড়ে ছিলো পৌরবাসী। তবে এবার সেই ধোয়াশা দূর হতে শুরু করেছে পৌরবাসীর মধ্যে।
জানা গেছে, সম্প্রীতি, ৩০জানুয়ারী মুন্ডুমালা পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন আমিনের পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন না নেমে উল্টো নৌকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে জগ মার্কায় ভোট করতে সহযোগিতা করেছেন তাঁরা।
যার ফলে,মুন্ডুমালা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমানের জগ প্রতীকের কাছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট দেয়া সেন্টারে মাত্র ৬১ভোটে পরাজয় বরন করতে হয় আওয়ামী লীগে নৌকার প্রার্থীকে। অথচ সেই মুন্ডুমালা পৌরসভায় জগের পানিতে নৌকা ডুবানো আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তড়িঘড়ি করে সবার আগেই নেমে পড়েছেন নৌকার জন্য ভোট চেয়ে পৌরবাসীর কাছে অভিনয় করতে।
এতে করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ভোট চাওয়া নিয়ে পৌরবাসী ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা যদি আওয়ামী লীগ দলকে ভালো বাসতেন, আওয়ামী লীগের নৌকাকে ভালো বাসতেন, তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ভালো বাসতেন তাহলে তারা কেন মুন্ডুমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায় ভোট করতে যাননি।
নৌকার জন্য মুন্ডুমালা পৌরবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করেন নি প্রশ্ন? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে। উল্টো তাঁরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তাদের অনুগত সাইদুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে তার পক্ষে ভোট করলেন। যে সেন্টারে কোনদিন নৌকা ফেল করেননি, এবার কেন সেই সেন্টারে নৌকা ফেল করলো। তাও আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির ভোট দেয়া সেন্টারে মাত্র ৬৭টি ভোটে জগের কাছে নৌকার পরাজয়।
যাঁরা নৌকার পরাজয় ঘটিয়েছেন তাঁরাই আবার তানোর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে একটু আগে ভাগেই মাঠে নেমেছেন। এবং যাঁরা মুন্ডুমালা পৌরসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চেয়ে দিনরাত মাঠে ঘাটে নিরলস পরিশ্রম করেছে তাদেরকেই বরং তানোর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থীর পক্ষে ভোট করতে নামতে না দেয়ার জন্য শুরু করেছিলেন পাঁয়তারা।
১৮ views