বিধান মন্ডল ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি গ্রামে অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় মোঃ লাল মিয়া (৫৪) ও তার ছোট ভাই মোঃ মোজাফফর হোসেন (৪৮) কে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা।
খোজ নিয়ে জানা যায়, গতরাতে (১৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত) খাসকান্দি গ্রামের মোঃ ইকবাল খাঁনের বাড়িতে চুরির উদ্যেশ্যে প্রবেশ করে একই গ্রামের আনোয়ার মজুমদারের ছেলে রায়হান মজুমদার। গভীর রাতে ইকবাল খাঁনের স্ত্রী কুলসুম বেগম প্রকৃতির ডাকে বাড়ীর বাহিরের টয়লেটে যান। তখন তিনি দেখতে পান অন্ধকারে কেউ একজন দাড়িয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর যখন অন্ধকারে দাঁড়ানো ব্যক্তি ঘরের দিকে যেতে শুরু করে তখন কুলসুম বেগমও তার পেছন পেছন যেতে শুরু করে এবং ঘরে প্রবেশের সময় দেখতে পান যে লোকটি রায়হান মজুমদার। তিনি তখন চিৎকার দিয়ে তার স্বামীকে ডাকলে রায়হান পালিয়ে যায়।
এদিকে আজ সকালে রায়হানের পক্ষে কয়েকজন কুলসুম বেগমকে বলেন এই বিষয় নিয়ে কোন কিছু করার দরকার নেই, আমরা সন্ধ্যার পর বসে গোপনে বিষয়টি মিমাংসা করে ফেলবো। এই কথা শুনে কুলসুম বেগম রাস্তায় এসে চিল্লাচিল্লি করে এসব কথা এলাকার লোকজনের কাছে বলতে থাকেন। তখন লাল মিয়া বলেন গোপনে কেন মিমাংসা হবে? রায়হানের একটা শাস্তি হওয়া জরুরী। এর আগেও সে এ ধরনের জঘন্য কাজ করেছে। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। সেই মুহুর্তে শহীদ মজুমদার লাল মিয়ার সাথে তর্কাতর্কি শুরু করেন এবং এক পর্যায়ে সেখানে জাহাঙ্গীর মজুমদার, সালাম মজুমদার, রাজু মজুমদার, নুরু মাঝি, আনোয়ার মজুমদার, রায়হান মজুমদার ও আনোয়ার মজুমদারের ভাগ্নি জামাই সাগর উপস্থিত হয়ে লাল মিয়াকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারতে শুরু করে।
এসময় তার ছোট ভাই মোজাফফর জমির টাকা দেওয়ার উদ্যেশ্যে টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলে তার ভাইকে মারতে দেখে এগিয়ে যান এবং তখন তাকেও লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করে আনোয়ার মজুমদার ও তার সাংগো পাংগোরা। এক পর্যায়ে দা দিয়ে লাল মিয়ার মাথায় কোপ দিলে তিনি মাটিতে পরে যান। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে আহতদেরকে উদ্ধার করে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত লাল মিয়া জানান, ঘটনাটির জন্য আমরা মোটেও প্রস্তুত ছিলামনা। আমরা দুইভাই প্রবাসে থাকি। করোনার কারনে এখন দেশে আছি। ফ্লাইট চালু হলে আমার ভাই চলে যাবে। আমি এখন এখানেই কাজ করি। একজন মানুষ অন্যায় করবে আর তার প্রতিবাদ করলে যদি কোপ খেতে হয় তাহলে এর থেকে কষ্টের আর কিছু হয় না। আর এই ছেলেটির চরিত্র এত খারাপ যে এলাকার মা, বোন, মেয়েরা কেউ সস্তিতে নেই। আর চুরিতো নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। এর থেকে কি আমরা মুক্তি পাবোনা? মারামারিতে আমার ভাইয়ের গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ও নগদ ৫০ হাজার টাকাও খোয়া গেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে কানাইপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ খোকন খান জানান, এই রায়হান ও তার পরিবারের কেউ কোন কাজকর্ম করে না। চুরি করা ছাড়াও নানা রকম বাটপারি করে চলে। আর রায়হানের চরিত্র খুবই খারাপ। এলাকার সকল নারীরাই তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। আগেরও মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতিপূর্বে তাকে নিয়ে শালিস করতে গেলে শালিসকারী সকলেই তাদের দ্বারা আহত হয়। এখন তার অত্যাচারের মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। এখন প্রশাসনই পারে এর সমাধান করতে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই প্রবীর কুমার রায় জানান, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ঘটনার সত্যতা পাই। আসামীরা সকলে পলাতক রয়েছে। তবে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ওসি স্যারের সাথে পরামর্শ সাপেক্ষে মামলা রুজু করা হবে।