বেরোবি প্রতিনিধি,রংপুর : আবেদন না করেই পদোন্নতি পাওয়ার জন্য ফেসবুকে অাবেগঘণ স্ট্যাটাস দিয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক। তিনি হলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল লতিফ।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উপাচার্যসহ বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আর এম হাফিজুর রহমান ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমানকে জড়িয়ে মনগড়াভাবে দোষারোপ করে একটি আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন। যা বিভিন্ন গ্রুপে ভাইরাল হওয়ায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া স্ট্যাটাসে আব্দুল লতিফ বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আর এম হাফিজুর রহমানকে নিয়ে লিখেন ,”সেলিম স্যারকেও বলেছি- তিনি নাকি কিছু করতে পারবেন না বরং তিনি কোর্ট টাই বানানো বা কলাম লিখতে পরামর্শ দেন। আমি কার্যত কোনদিন শিক্ষক রাজনীতি করিনি বা ইচ্ছাও ছিল না। জ্ঞাতভাবে একাডেমিক কোন অন্যায় করিনি।”
একই পোস্টে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাবিউর রহমানকে নিয়ে লিখেন,”আজকে তাবিউর ভাই, সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন! এক সাথে জয়েন করেছিলাম। জাপান থেকে পিএইচডি করেছি, বিশ্বের সেরা সব জার্নালে প্রকাশনা করেছি। সামর্থ্যের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শিক্ষকতা করবার চেষ্টা করেছি। আমি পেলাম না, ওনারা পেলেন!!! শিক্ষক সমিতির নেতা হিসাবে একবারও মনে হলোনা এক বঞ্চিতের কথা।”
উক্ত স্ট্যাটাসে ওই শিক্ষকবৃন্দের মৃত্যুর পর তাদের জানাজায় গিয়ে এসব বিষয়ের হিস্যা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আব্দুল লতিফ সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য এখনো কোন আবেদন করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী আবেদন ছাড়া পদোন্নতির কোন সুযোগ নেই। অথচ আবেদন না করেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ এবং বিজ্ঞান অনুষদের ডীন হাফিজুর রহমানের কাছে তদবিরের জন্য যাওয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নীতিবাক্য লিখা স্ব-বিরোধী বলে মনে করেছেন অনেকেই।
এবিষয়ে রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তানিয়া তোফাজ জানান, আব্দুল লতিফ পিএইচডি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর যথা নিয়মে প্রশাসন তার ডিগ্রী অনুমোদন করেছে। এছাড়াও কিছুদিন আগে সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ী হওয়ার জন্য আবেদন করলে বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশসহ পাঠানো হয় এবং প্রশাসন তাকে স্থায়ী করে। তবে সহযোগী অধ্যাপক পদে তিনি কোনো আবেদন করেননি।
জানা যায়, বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ নিয়ে রসায়ন বিভাগের শিক্ষকরা দুইভাগে বিভক্ত। একপক্ষ বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবি করলেও প্রশাসন অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া তানিয়া তোফাজের মাধ্যমেই বিভাগের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বিভাগের শিক্ষকদের অপর পক্ষ সহযোগিতা করে আসছে।
শিক্ষক আব্দুল লতিফ শুরুতে তানিয়ার পক্ষে ছিলেন ও তার মাধ্যমেই সহকারী অধ্যাপক পদে স্থায়ীকরণের আবেদন করেন। এমনকি তানিয়া তোফাজকে বিভাগীয় প্রধান করে যে প্ল্যানিং কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, সেই কমিটির অন্যতম সদস্য আব্দুল লতিফ। তবে সহকারী অধ্যাপক পদে তার চাকরি স্থায়ী হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনিও বিভাগীয় প্রধানের পরিবর্তন দাবি করে আন্দোলনে শামিল হন।
আবেদন না করেই কীভাবে পদোন্নতি এবং দুজন শিক্ষককে দোষারোপের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে আব্দুল লতিফ জানান, অভিমান থেকে তিনি বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং শিক্ষক সমিতির নেতা হিসেবে দুজন শিক্ষককে নিয়ে লিখেছেন। তিনি এ দুজনের সাথে আলোচনা করতে বসবেন।