উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে খানিক নিষ্প্রভ ছিলেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসের পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। যে কারণে শুরু হয়ে যায় নানান সমালোচনা। মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ দামে তাকে বিক্রি করে দেয়ার গুঞ্জনও শোনা যায় জুভেন্টাসের পক্ষ থেকে।
সব সমালোচনা ও গুঞ্জনকে স্রেফ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার রোনালদো। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায়ের পর মাঠে নামা প্রথম ম্যাচেই করেছেন পারফেক্ট হ্যাটট্রিক, তা কি না মাত্র ৩২ মিনিটের মধ্যে। রোনালদোর হ্যাটট্রিকে জুভেন্টাস পেয়েছে ৩-১ গোলের জয়।
মূলত ডান পা, বাম পা ও হেডে গোলের মাধ্যমে হ্যাটট্রিক করলে সেটিকে ধরা হয় পারফেক্ট হ্যাটট্রিক হিসেবে। রোববার রাতে টেবিলের নিচের সারির দল কালিয়ারির বিপক্ষে এ কাজটিই করে দেখিয়েছেন রোনালদো। যা তার ক্যারিয়ারের নবম পারফেক্ট হ্যাটট্রিক এবং সবমিলিয়ে ৫৭তম হ্যাটট্রিক।
রোববার কালিয়ারির মাঠে খেলতে গিয়ে খুব একটা আধিপত্য নিয়ে খেলতে পারেনি জুভেন্টাস। ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরাই। এমনকি জুভেন্টাসের ১০ আক্রমণের বিপরীতে তাদের রক্ষণে কালিয়ারি হানা দিয়েছে ১২ বার। তবে গোলের খেলায় মূল পার্থক্যটা গড়ে দিয়েছেন রোনালদোই।
ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটের সময় হেডে প্রথম গোলটি করেন পর্তুগিজ যুবরাজ। সতীর্থ হুয়ান কুয়াড্রাদোর দারুণ কর্নারে সবাইকে ছাড়িয়ে লাফিয়ে উঠে করা হেডে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন রোনালদো। জুভেন্টাস পায় প্রথম লিড। দ্বিতীয় গোল করতে সময় নেন আরও ১৫ মিনিট।
jagonews24
ডি-বক্সের মধ্যে তাকে ফাউল করেন প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষক অ্যালেসিও ক্রাগনো, রেফারি বাজান পেনাল্টির বাঁশি। স্পটকিক থেকে ডান পায়ে গোল আদায়ে কোনো ভুল করেননি রোনালদো। দুই গোলে এগিয়ে যায় ওল্ড লেডিরা। এর মিনিট সাতেক পর দৃষ্টিনন্দন এক গোল করেন রোনালদো।
পাল্টা আক্রমণে বাম দিক থেকে ফেডরিখ চিয়েসার পাস পেয়ে বাম পায়ের কোনাকুনি শটে তৃতীয়বারের মতো লক্ষ্যভেদ করেন জুভেন্টাসের সবচেয়ে বড় তারকা এবং পূরণ হয় তার পারফেক্ট হ্যাটট্রিক। ম্যাচে আর গোল পায়নি জুভেন্টাস। এ নিয়ে চলতি লিগে তার গোলসংখ্যা দাঁড়াল ২৩।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল শোধ করে দিয়েছে কালিয়ারি। ম্যাচের ৬১ মিনিটের সময় জুভেন্টাসের ক্লিন শিট কেড়ে নেন স্বনামধন্য কোচ ডিয়েগোর সিমিওনের ছেলে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জিওভানি সিমিওনে। যার ফলে জুভেন্টাসকে মাঠ ছাড়তে হয় ৩-১ গোলের জয় নিয়ে।
এ জয়ের পরেও অবশ্য তৃতীয় স্থান থেকে ওপরে উঠতে পারেনি জুভেন্টাস। এ পর্যন্ত খেলা ২৬ ম্যাচে ৫৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে তারা। সবার ওপরে থাকা ইন্টার মিলানের সংগ্রহ ২৭ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে এসি মিলান ৫৬ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থান করছে দুই নম্বরে।