মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত জান্তা সরকারের ১১জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চলেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। আগামী সোমবারই ইইউ পরাষ্ট্রমন্ত্রীরা এই নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিতে পারেন বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় কূটনীতিকরা। খবর এএফপির।
মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞার দেওয়ার বিষয়ে গত মাসেই সম্মতি দিয়েছিল ২৭ দেশের এই জোট।
এক কূটনীতিক জানিয়েছেন, এ সপ্তাহে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও পুলিশের ১১ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব পাস হতে চলেছে। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও ভিসা কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ইইউ’র ওই কূটনীতিক বলেছেন, এ পর্যায়ে মিয়ানমার সেনাসংশ্লিষ্ট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না থাকলেও আগামী সপ্তাহগুলোতে সেগুলোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আসার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। ওই দিনই আটক করা হয় অং সান সু চিসহ দেশটির শীর্ষস্থানীয় বেশিরভাগ রাজনৈতিক নেতাকে।
এরপর থেকেই উত্তপ্ত মিয়ানমারের রাজপথ। সেখানে প্রতিদিনই চলছে বিক্ষোভ-সংঘর্ষ। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামছে দেশটির সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে জান্তা সরকারও।
স্থানীয় একটি পর্যবেক্ষক সংস্থার হিসাবে, মিয়ানমারে এ পর্যন্ত জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ-সহিংসতায় অন্তত ২৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
গণতন্ত্রকামী আন্দোলনকারীদের ওপর এমন দমন-পীড়নে আন্তর্জাতিকভাবেও বেশ চাপে রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত হয়েছে তারা।
এর আগে, রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিপীড়নের কারণে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল অন্তত ১৪ জন শীর্ষ সেনা ও সীমান্তরক্ষা কর্মকর্তাকে।