রেদোয়ান হাসান ,সাভার,ঢাকা.দৈনিক শিরোমণিঃ
করোনা মহামারিতে চলমান লকডাউনে সারা দেশের সাথে বন্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থা। কঠোর নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে দূরপাল্লার যানসহ গণপরিবহন চলাচল। কিন্তু সাভারে এই নির্দেশনার তোয়াক্কা করছেন না পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। নানা পন্থায় তারা সড়কে বাস চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, দ্বিগুণ ভাড়ায় গাদাগাদি করে তুলছেন যাত্রীও। এমন অবস্থায় দ্বিগুণ ভাড়ায় গাদাগাদি করে চলাচল করায় যেমন উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি। তেমনি প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সাভারের ঢাকা-আরিচা ও আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে বিভিন্ন সময় চলাচল করছে স্থানীয় বাস। মাঝে মধ্যে দূরপাল্লার দুই-একটি গণপরিবহনের দেখা মিলছে।
স্থানীয় বাস গুলোকে হেমায়েতপুর, সাভার বাস স্ট্যান্ড, রেডিওকলোনী, সিএন্ডবি, বিশমাইল, নবীনগর, পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, ইপিজেডসহ বিভিন্ন স্টপেজে যাত্রী উঠানামা করতে দেখা গেছে।
সাভার পরিবহন, ইতিহাস, ঠিকানা ও আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের বাস গুলোই চলছে সড়কে। কোন বাসের সামনে স্টিকার সাটানো গার্মেন্টস শ্রমিক, কোনটার সামনে নবাবগঞ্জ থানা। অনেক বাসের আবার নেই কোন স্টিকার। বাসের ডাবল সিটগুলো ভর্তি যাত্রী থাকলেও অনেককে দেখা গেছে গাদাগাদি করে দাড়িয়ে যেতে। তবে সড়কের কোথাও পুলিশ কিংবা প্রশাসনের নজরদারি চোখে পড়েনি।
ইতিহাস পরিবহনে নবীনগর থেকে আমিনবাজারগামী যাত্রী নুরুল ইসলাম ও তাহমিনা আক্তার দম্পতির সাথে বেশি ভাড়া দাবি করায় কন্ডাক্টরের সাথে বিতণ্ডা হয়। কিন্তু কন্ডাক্টরের দাবিকৃত ভাড়া দিতে বাধ্য হন ওই দম্পতি।
যাত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এহান (নবীনগর) থাইকা আমিনবাজারের ভাড়া ২৫ ট্যাকা। আমি আর আমার ওয়াইফের দুইজনের ভাড়া ৫০ ট্যাকা দিছি। কিন্তু কন্টাকটার নিবো না কইয়া ৮০ ট্যাকা চায়। কিসের জন্য এত ট্যাকা বেশি দিমু হ্যারও কোন উত্তর নাই। পরে ১০০ ট্যাকা নিয়া কন্টাকটার আমারে ২০ ট্যাকা ফেরত দিয়া চইলা গেছে। আমার কোন কথা হেই কানেই নিলো না। মগের মুল্লুক পাইয়া বসছে সব। আমরা পাবলিকগো ব্যাক্কে (সবাই) মিইল্লা চুইষা খাইতাছে। কোন বিচার নাই, প্রতিবাদ নাই।’
একই বাসে সাভারের উদ্দেশ্যে গাদাগাদি করে দাড়িয়ে যাওয়া যাত্রী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘কি করবো ভাই, যাইতে হবে এটাই বড় কথা। অনেক সময় ধরে দাড়ায় আছি কিন্তু গাড়ি নাই। অফিস শেষ করে ক্লান্ত হয়ে দাড়ায় আছি। আবার ইফতারের সময়ও হয়ে আসছে তাই দৌড়ায় এই বাসে উঠছি। উইঠা দেখি সিট নাই। আর রাস্তায় রিকশা চললেও ভাড়া অনেক বেশি। তাই গাদাগাদি কইরাই বাসে যাইতেছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইতিহাস পরিবহনের কন্ডাক্টর বলেন, ‘বাস চালামুনাতো কি করমু ভাই। সবিতো চলে বাস চালাইতে দোষ কি? আর বাস না চালাইলে আমরা খামু কি? কত দিন ধইরা আমাগো কামকাজ নাই। এমনে চললে পোলামাইয়াতো না খাইয়া মরবো।
দ্বিগুণ ভাড়ায় গাদাগাদি করে যাত্রী নিচ্ছেন কেন এমন প্রশ্নে সরল হাসি দিয়ে দ্রুত চলে যান বাসের এই স্টাফ।
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত চেকপোস্ট আছে এবং গতকালকে থেকে আমরা অভিযানে নামছি। গতকাল মামলাও দিয়েছি। সন্ধ্যার একটু পরেই আমাদের কার্যক্রম শুরু হলে দেখতে পারবেন। কারণ ইফতারের একটু আগে বের হইতো।’
তবে এ বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করের তাকে পাওয়া যায়নি।
২ views