নিজস্ব প্রতিবেদক দৈনিক শিরোমণিঃ
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ্র ওপর সিপিবি নেত্রি জলি তালুকদার ও তার সহযোগীদের হামালার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না করায় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে সংগঠনটি।মঙ্গলবার (১ জুন) ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজার পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।এতে বলা হয়, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি এদেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের পার্টি। জন্মলগ্ন থেকে কমিউনিস্ট পার্টি মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টির একজন সম্পাদক ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতির উপর হামলা করে পার্টির আদর্শ ও গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কেবল তাই নয়; অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার বদলে হামলার ঘটনা যেকোন প্রকার ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে যা নিন্দনীয়। যেখানে ক্ষমতাসীন-দলীয় কেউ অন্যায় করলে কমিউনিস্ট পার্টি বিন্দুমাত্র ছাড় না দিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করে যায় সেখানে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামরত কমিউনিস্ট পার্টিতে একজন অন্যায় করে পার পেয়ে গেলে কমিউনিস্ট পার্টি এবং আন্দোলন সংগ্রাম জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে এবং নৈতিকতার প্রশ্নে তার দৃঢ় অবস্থান হারিয়ে ফেলবে।’এতে আরও বলা হয়, ‘অনতিবিলম্বে আমরা তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ ও পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদারসহ তার সহযোগীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি৷ ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতির উপর হামলার ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়ন কোন নমনীয়তা প্রদর্শন করবে না।’এদিকে ঘটনার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর পুরানা পল্টনে ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মোঃ ফয়েজ উল্লাহকে কথা বলতে ডেকে নিয়ে তার উপর হামলা চালায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সম্পাদক জলি তালুকদার এবং তার সহযোগী হযরত আলী।তবে ঘটনার পর মুখে কুলুপ এঁটে থাকলেও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হলে সমালোচনার মুখে পরে কমিউনিস্ট পার্টি। পরে ৮ এপ্রিল পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন ও নিমাই গাঙ্গুলিকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রদানের সময়সীমা ছিল ১০ দিন।তবে তারা সময়সীমার মধ্যে রিপোর্ট দিতে ব্যরথ হওয়ার দেড়মাস পর রিপোর্ট প্রকাশ ছাড়াই অভিযুক্ত জলি তালুকদারের সদস্যপদ দুই মাসের জন্য স্থগিত করলেও অপর সহযোগী হযরত আলী বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণই করা হয়নি।এনিয়ে সম্প্রতি ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় নেতৃবৃন্দ কমিউনিস্ট পার্টির এমন সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল বলেন, কমিউনিস্ট পার্টির এমন সিদ্ধান্ত হতাশাজনক। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার আশা করেছিলাম কিন্তু সেটা পেলাম না। সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটি ও মারধরের বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্য কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘আমাদের তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিছে সেই হিসাবে পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা তো সবই জানে, তারপরও এমন বিবৃতি তারা দিতে পারে না। এছাড়া ঘটনার সাক্ষ্য প্রমাণ কিছু পাইনি তবুও যতটুকু মনে হয়েছে ততটুকু ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। আর এটা আমাদের আন্তঃসাংগঠনিক বিষয়।’ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতির বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমকে ফোন করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কোন গ্রুপের বিবৃতি? আর তারা কি কমিউনিস্ট পার্টি করে যে আমরা কি সিদ্ধান্ত নিছি না নিছি তারা জানবে? আর ছাত্র ইউনিয়ন কি আমাদের সংগঠন? সিপিবির সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক আছে? আমি এই বিষয়ে আপনাকে কিছু বলবো না, আমাদের পার্টির লোকজনকে জানানো হয়েছে কি সিদ্ধান্ত। এবিষয়ে বাইরে কোন মন্তব্য করবো না।’
০ views