ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার প্রাচিনতম আম বাজারের মধ্যে অন্যতম এই বাজার। থানা সংলগ্ন পুরাতন বাজারে ভোর ৫.০০ টা থেকে সকাল ১০ টা পযর্ন্ত চলে আম ক্রয়-বিক্রয়। এর আগে ভোর থেকে বাগানে আম পেড়ে ক্যারেট ভর্তি করে ভ্যানে করে নিয়ে আসেন ঘোড়াঘাটের সবচেয়ে বড় এই আমের বাজারে। হরেক স্বাদ ও জাতের আম বেচাকেনায় মূখর হয়ে উঠেছে ঘোড়াঘাট পুরাতন বাজার। উপজেলার ওসমানপুর, রানীগঞ্জ, সূরা মসজিদ, লালমাটি, কানাগাড়ি, ডুগডুগিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ও পাশ্ববর্তী উপজেলার নবাবগঞ্জ, টুপিরহাট থেকে আম বিক্রি করতে নিয়ে আসেন আম চাষিরা। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানের আম বাগান থেকেও সারাদেশে বিভিন্ন আম বাজারে আম সরবারহ করা হয়।বর্তমানে বাজারে গুটিজাতের প্রধান আম গোপালভোগ, হিম সাগর, লক্ষনাসহ বিভিন্ন গুটি জাতের আমের সরবারহ অনেক বেশি রয়েছে তবে, ১০/১৫ দিনের মধ্যে সব জাতের আম-কাঠাল বাজারে আসবে জানিয়েছে বিক্রেতারা। কোভিড-১৯ এর কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকার কারণে বাহিরে অধ্যায়নরত ছাএরা মৌসুমি আম ব্যবসায়ী হিসেবে অনলাইনে আমের অর্ডার ও কুরিয়ার-সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনলাইনে আম ক্রেতাদের আম সরবারহ করছে।আম নিয়ে অপেক্ষমান একজন অম বিক্রেতা মো.আমিরুল মিয়া জানান, বাজারে আম প্রচুর কিন্তু ক্রেতা নেই, এই সুযোগে আমের অর্ধেক দাম করছে ব্যাপারিরা। কিটনাশকের দাম অনেক আবার ধরেন লেবার লাগে তিন জন দুপুরবেলা ভাত খেলে আবার খরচ হয় ৫০০ টাকা। অপরদিকে অনেকব্যবসায়ীরা আম নেয়ার পর টাকা বাকি রেখে দেয়, টাকা দিতে চায় না। তিনি আরও বলেন, আমচাষে যে পরিমান টাকা খরচ করছি, সে হিসেবে হয়তো টাকা পাবোনা। এবার আমের দাম একেবারেই কম। এমন অবস্থা ক্রেতাদেরকে ধরে ধরে নিয়ে এসে আম দেখাতে হচ্ছে। রানা মিয়া নামের স্থানীয় এক আমচাষি বলেন, আমাদের এখানে ক্রেতা অনেক কম। সাধারণ ক্রেতা নাই বললেই চলে। গাইবান্ধা, পলাশবাড়ি, গোবিন্দগঞ্জ, ঢোলভাঙ্গার অনেক ব্যাপারিরা আসলেও রংপুর, বগুড়া ও ঢাকাসহ অন্যান্য জেলার যেসব বাইরের ব্যাপারিরা আসতেন এবং ট্রাক, সিএনজি, ভ্যানে আম লোড দিতেন, সে সব ব্যাপারিরা অনেকে আর আসেন না।ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি-সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যঅনুযায়ী উপজেলাতে আম বাগান রয়েছে ২৪৫ টি ।সরেজমিনে দেখা যায়, গতবারের তুলনায় এবারে আমের জোগান অনেক বেশি থাকলেও তুলনামূলক ক্রেতা নেই বললেই চলে। কোভিড-১৯ এর কারণে বর্তমানে অনেক আমচাষি ও উদ্যোক্তার সৃষ্টি হলেও এটি একদিক দিয়ে যেমন ভালো অপরদিকে চাষিদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার অনেক ব্যবসায়ীই অনলাইনে অর্ডার দিয়ে আম কিনছেন।ঘোড়াঘাট আমের হাটের ইজারাদার ও আম ব্যবসায়ী মালিক সমিতির ক্যাশিয়ার মো:আনিছুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত আমের টোল নেয়ার অভিযোগ এখন পর্যন্ত কোনো আমচাষিদের কাছে আমরা পাইনি। পেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তারা যদি ব্যাপারি বা আড়তদারদের সঙ্গে সমঝোতা করেন তবে সেক্ষেত্রে বলার কিছু নেই। ক্রেতা সঙ্কটের বিষয়ে তিনি বলেন, গতবছরের তুলনায় এবার ক্রেতা একেবারেই নেই। এর প্রধান কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ কেই দায়ী করেছেন ব্যবসায়ী সমিতির এই সদস্য।