শেখ তোফাজ্জেল হোসেন খুলনা সিটি প্রতিনিধিঃ খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ছয় দফা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ৬ দফাকে বাঙালির ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তির সনদ বলা হয়। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফাকে “আমাদের বাঁচার দাবি” বলেছেন। তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানি জোঁকদের শোষণে রক্তশূন্য হয়ে পড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জাতি তখন মৃতপ্রায়, ঠিক এমন একটি সময় বাঁচার স্বপ্ন দেখালেন বঙ্গবন্ধু। এই সময়ে তিনি দলের গন্ডি পেরিয়ে পূর্ব-বাংলার গণমানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়ে যান বঙ্গবন্ধু। শেখ মুজিব যখন পরাহত বাঙালিকে প্রাণের বাণী শোনালেন, তখন দেশজুড়ে সাড়া পড়ে গেলো, জেগে উঠতে শুরু করলো আশাহত বাঙালি। এক চিরন্তন মুক্তির আশায় বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাকে লুফে নিলো আমাদের পূর্বপুরুষেরা ।তিনি আরো বলেন, দেশ ভাগের পর থেকে পাকিস্তানি শোষকদের অব্যাহত শোষণের কারণে বাংলার সমৃদ্ধ অর্থনীতি ধ্বংসের মুখে পতিত হয়। এছাড়াও অব্যাহতভাবে চলছিল বাঙালীদের উপর সাংস্কৃতিক নিপীড়ন। তার উপর, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধের সময় পূর্ব-পাকিস্তানকে (বাংলাদেশকে) সম্পূর্ণ অরক্ষিত রাখা হয়। পূর্ব-পাকিস্তান সীমান্তে ছিল না কোনো সীমান্তরক্ষী। সেসময় ভারত চাইলে এক দিনেই পুরো পূর্ব-পাকিস্তান দখল করতে পারতো। এরপরেই বাঙালি জাতি বুঝে যায় যে, পাকিস্তানি শোষকদের কাছে বাঙ্গালির জান-মালের কোনো দাম নাই। দেড় যুগের জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ হতে শুরু করে। নেতৃত্বে থাকেন দীর্ঘাকার বলিষ্ঠ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরে বিরোধী দলের একটা সম্মেলনে ছয় দফা কর্মসূচি উত্থাপন করেন। কিন্তু তাঁর প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি সম্মেলন বর্জন করেন বঙ্গবন্ধু। এরপর ঢাকা ফিরে এসে ২১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভায় ছয় দফা পাস করান তৎকালীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান। ২৩ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে ৬ দফা উত্থাপন করা হয় লাহোর প্রস্তাবের সাথে মিল রেখে। একই সাথে এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বহুমুখী কর্মসূচিও গ্রহন করা হয়। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা একদিনে হয়নি। দীর্ঘ ৪৭ সাল থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির অধিকার আদায়ের লক্ষে স্বাধীনতার আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো। সেই থেকেই বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতার আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিলো। ৬ দফার মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়েছিলো।গতকাল সোমবার বিকাল ৫ টায় দলীয় কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য এ্যাড. চিশতী সোহরাব হোসেন শিকদার, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল সিংহ রায়, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম বন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ কামাল, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. খন্দকার মজিবর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. অলোকা নন্দা দাস, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শেখ ফারুক হাসান হিটলু, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক রনজিত কুমার ঘোষ, যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুর রহমান পলাশ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মো. আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা মাকসুদ আলম খাজা, কামরুল ইসলাম বাবলু, হাফেজ মো. শামীম, মো. মফিদুল ইসলাম টুটুল, শেখ নুর মোহাম্মদ, এ্যাড. শেখ আনিসুর রহমান পপলু, অধ্যা. রুনু ইকবাল, এস এম আকিল উদ্দিন, মো. মোতালেব হোসেন, মোস্তফা কামাল, মো. আমির হোসেন, বাবুল সরদার বাদল, শেখ জাহিদ হোসেন, আব্দুল হাই পলাশ, মো. জাহিদুল হক, চ. ম. মজিবর রহমান, এ্যাড. শামীম মোশারফ, শেখ মো. রুহুল আমিন, এমরানুল হক বাবু, ফয়জুল ইসলাম টিটো, ওহিদুল ইসলাম পলাশ, জিলহাস হাওলাদার, শেখ আবু জাফর, আলমগীর মল্লিক, মো. শহীদুল হাসান, জহির আব্বাস, আসাদুজ্জামান বাবু, জব্বার আলী হীরা, মাহমুদুর রহমান রাজেস, মুক্তাজিরুল ইসলাম সোহাগ, ওমর কামালসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।