রেদোয়ান হাসান সাভার,ঢাকা প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
ঢাকার সাভারে একটি কারখানার বয়লারের পানিতে দগ্ধ হয়ে দুই শ্রমিক ও আলাদা ঘটনায় বাসা বাড়িতে টয়লেটের গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরেক নারী শ্রমিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও নিহতের স্বজনরা।বৃহস্পতিবার সকালে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম বাসা-বাড়িতে বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়া নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
নিহতরা হলেন, রংপুর জেলার কাউনিয়া থানার সতদা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে রাশেদুল ইসলাম ও কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার হযরত আলীর ছেলে হাসান আলী। তারা উভয়ই আশুলিয়ার কুটুরিয়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় এসডিএস ইয়ার্ন ডায়িং নামের একটি কারখানায় কাজ করতেন।অপর ঘটনায় নিহত ফিরোজা বেগম নামে ওই নারী আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও নিহতের স্বজনদের মাধ্যমে জানা গেছে, গত ৩ জুন সন্ধ্যায় আশুলিয়ার কুটুরিয়া এলাকায় এসডিএস ইয়ার্ন ডায়িং নামের একটি কারখানার বয়লারের গরম পানিতে দগ্ধ হন হাসান, রাশেদুল, আনোয়ার ও ওয়াসিম নামে চার শ্রমিক। রাতেই তাদের সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার্ড করা হয়। এদের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে হাসান ও সবশেষ গতকাল বুধবার রাতে রাশেদুল মারা যান। তবে বাকী দুই জন চিকিৎসা নিয়ে আগেই ফিরে যান।
এর আগে গত ৩১ মে আশুলিয়ার কবরস্থান রোড এলাকায় হুমায়ন কবিরের বাড়িতে টয়লেটের গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের তিন জনসহ মোট ছয় জন দগ্ধ হন বলে নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে গতকাল বুধবার রাতে ফিরোজা বেগম নামে এক নারী মারা যান। ডায়িং কারখানায় নিহত শ্রমিক রাশেদুল ইসলামের ভাই শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কারখানায় কাজ করার সময় বয়লারের পানিতে আমার ভাই দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলো। ওর শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন চিকিৎসক। প্রথম দিকে অবস্থা ভালো ছিলো। কিন্তু গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি হলে সে মারা যায়। আমার ভাইয়ের লাশ এখন মর্গে রাখা আছে। ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী আমরা তার বিচার চাই।নিহত শ্রমিক হাসান আলীর মামা সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসানের শরীরের ৯০-৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলো। শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় খাবার খেতে পারতো না হাসান। এমনকি ঘটনার পর থেকে চোখ খুলে দেখতে পারেনি সে। সবশেষ পরশুদিন মঙ্গলবার রাতে হাসান মারা যায়। পরে বুধবার গভীর রাতে দেশের বাড়ি কুড়িগ্রামে তার লাশ আনা হলে আজ বুধবার ভোরে দাফন করা হয়।গত ২ জুন বাসা-বাড়িতে টয়লেটের গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ একজনের মৃত্যুর বিষয়ে ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ‘ওই ঘটনায় একই পরিবারের চারজন সহ দগ্ধ ছয়জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিলো। গতকাল বুধবার রাতে আফরোজা বেগম নামে এক নারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। তার পরিচিতজন আমাকে এটুকুই জানাতে পেরেছেন। তবে তার বিস্তারিত পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
১ view