মোঃসোহেল সিকদার মাদারীপুর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট বন্দরে জমে উঠেছিল কোরবানীর পশুর হাট। বুধবার (৭ জুলাই) ভোর থেকে শুরু করে এক নাগারে বেলা ১০টা পর্যন্ত এ হাটে গরু কেনা-বেচা চলছিল। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে মুহুর্তের মধ্যেই বাজার শেষ যায়। জানা গেছে, মাদারীপুর জেলার সর্বত্র পশুর হাট আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। সোমবার টেকেরহাট এসে এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। এছাড়া ইউএনও মো. আনিসুজ্জামান মঙ্গলবার পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের ডেকে পশুর হাট বসার ব্যাপারে নিষেধ করেন এবং মাইকিং করে সকলকে অবগত করেন। এসব উপেক্ষা করে এক শ্রেনীর সুবিধাভোগীমহল বুধবার (৭ জুলাই) সকাল থেকেই গরুর হাট শুরু করেন। দুর দুরান্ত থেকে ব্যাপারীরাও গরু কেনা-বেচার উদ্যেশ্যে এখানে আসেন।বেশ কিছু গরু কেনা বেচাও হয়েছে। এর মধ্যে রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেনাবাহিনী ও বিজিবি নিয়ে টেকেরহাট গরুর হাটে এসে উপস্থিত হন। তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সুবিধাভোগীরা তড়িঘড়ি করে সটকে পরেন এবং মাইকিং করে ৫ মিনিটের মধ্যে সবাইকে বাজার ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়। এতে দুর থেকে আসা ব্যাপরীরা বিপাকে পড়েন। যারা গরু কেনা বেচা করেছে তাদেরকে গরু প্রতি ৫’শ টাকা রেখে পৌরসভার ফেরৎ রশিদ ধরিয়ে দিয়েছে একটি মহল। শিবচরের মাদবরেরচর থেকে আসা এক গরু ব্যাবসায়ী জানান, আমাকে পৌরসভার ফেরৎ রশিদ দিয়ে গরু প্রতি ৫’শ টাকা করে নিয়েছে। ভাঙ্গার মালিগ্রাম থেকে আসা আরেক ব্যাবসায়ী জানান, আমাকেও হলুদ একটি রশিদ ধরিয়ে দিয়ে গরু প্রতি ৫’শ টাকা করে নিয়েছেন। মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর এলাকার এক ব্যাবসায়ী জানান, আমি ৪ টি গরু কিনেছি। আমার কাছ থেকে ফেরৎ রশিদ দিয়ে ২১’শ টাকা নিয়েছে। কুষ্টিয়ার খোকসা এলাকার এক ব্যাবসায়ী জানান, আমি ৩৮ টি গরু কিনেছি। আমার কাছ থেকে ফেরৎ রশিদ দিয়ে ১৯ হাজার টাকা নিয়েছে। পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ সাগর আহম্মেদ উজির জানান, সরকারী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে হাট মিলেছে এবং একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাটটি মেলানো হয়েছে। আমি ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। আমার মধ্যে গরুর হাট। জেলা প্রশাসক আমাকে খাস কমিটিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে আমাকে না রেখে তার সিন্ডিকেটের লোক দিয়ে কমিটি করে, সেই কমিটির মাধ্যমে হাট বসিয়ে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে মেয়র লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করছে। পৌরসভার ফেরৎ রশিদ দিয়ে কোন কিছু না লিখে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করছে। আমি সিন্ডিকেটের একজনকে ধরেছিলাম। আমিনুল হাওলাদার এবং আবদুল হক আমার কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। রাজৈর পৌরসভার মেয়র নাজমা রশিদ জানান, হাটের ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা। খবর পেয়ে প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে হাট বন্ধ করে দিয়েছি। রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিসুজ্জামান জানান, টেকেরহাটে পশুর হাট মিলেছে বলে আমি সংবাদ পাই। এবং সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী ও বিজিবি নিয়ে গিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। এসময় আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মুহুর্তেই সব পালিয়ে যায়।