মিশকাতুজ্জামান,নড়াইলঃ নড়াইল শহরের কুড়িগ্রামের রাম কৃষ্ণ আশ্রম সড়কের বাসিন্দা সোনিয়া ফেরদৌস জুঁথী ইতিমধ্যে ছোট পরিসরের একজন উদ্যোক্তা হিসাবে ব্যাপক পরিচিত পেয়েছেন। পাশাপাশি তিসি সংবাদ কর্মী হিসাবে একটি ইংরেজী পত্রিকায় কাজ করছেন। ফেব্রিক্স রঙের মাধ্যমে সাদা কালো ও রঙ্গিন হ্যান্ড পেইন্ট ডিজাইন দ্বারা সকল বয়সী পুরুষদের পাঞ্জাবী , শিশুদের ফোতুয়া – ফ্রগ এবং শাড়ী ক্রেতাদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ছোট বেলা থেকেই সোনিয়ার ইচ্ছাছিল শিক্ষক হবেন। কিন্তু তা আর হলো না। ভালো কোন যোগাযোগ না থকায় সবই ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৬ সালে বাংলায় মাস্টার্স পাশ করে দীর্ঘদিন চাকুরির চেস্টা জরতে থাকেন। ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট শেষ হয় সরকারি চাকুরির বয়স সীমা । তার আগে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশসহ সারা পৃথীবিব্যপি দেখা দেয় মহামারির করোনা ভাইরাস।
সোনিয়া বলেন,করোনা ভাইরাসের কারণে ঘরে বসে বসেই দিন কাটতে থাকি। কি করি। কি করবো ভাবছি এমন সময় ভবনা আসে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ করবো। যেই ভাবা সেই কাজ। শুরু করলাম আমার তিন মাসের একমাত্র সন্তান তানজিমের জন্য সুতির হ্যান্ড পেইন্টের ফোতুয়া তৈরীর কাজ। সাথে সাথে বড়দের পাঞ্জাবীও তৈরী করতে লাগলাম। নীজের ছলেকে মডেল হিসাবে ফোতুয়া পরিয়ে তা নকশা নামে আমার ফেসবুক পেইজ এ পোষ্ট করলাম।
ফেসবুকে পোষ্ট করার কয়েকদিন পরেই চট্রগাম থেকে ফোতুয়া কেনার অর্ডার করলেন একজন ক্রেতা। শুরু হলো আমার অনলাইনে শিশুদের ফোতুয়া,ফ্রগ,কামিজ বিক্রির ব্যবসা। পাশাপাশি বিবিন্ন বয়সী পুরুষদের পাঞ্জাবীতে হ্যান্ড পেইন্ট করে তা ফেসবুকে পোস্ট দিতে শুরু করলাম। দেশর বিভিন্ন এলাকা থেকে আমার দেওয়া হ্যান্ড পেইন্টের পাঞ্জাবী পছন্দ এবং তা কিনতে আগ্রহী হলেন অনেক ক্রেতারা।
সোনিয়া ফেরদৌস জুঁথী আরো বলেণ,আস্তে আস্তে শিশুদের ফোতুয়া , ফ্রগ , কামিজ এবং পুরুষদের পাঞ্জাবী বিক্রি শুরু হলো। খাগড়াছড়ি সেনানীবাস থেকে লেঃ কনেল আলী হায়দার সাহেব ফেসবুকে আমার দেওয়া পাঞ্জবীর ছবি দেখে তিনি দুই পুত্র এবং নিজের জন্য মোট একই ডিজানের তিনটি পাঞ্জাবী কেনেন যা আমার প্রথম পাঞ্জাবী বিক্রি। সেই থেকে প্রতিনিয়ত অনলাইনে আমার শিউলি ফুল, সোনালু ফুল, মাধবী লতা, কদম, কাগজী ফুলসহ বিভিন্ন ডিজাইন করা হ্যান্ড পেইন্ট পাঞ্জবী এবং শিশুদের ফোতুয়া, ফ্রগ কামিজ বিক্রি হয়ে আসছে।
বর্তমানে সিল্ক ও হাফসিল্কের শাড়ীতে কদমফুলসহ কয়েক প্রকার ফুলের মাধ্যমে শাড়ী প্রস্তুত করছি। এ ঈদে বেশ কয়েকটি শাড়ীর অর্ডার পেয়েছি যা আমেরিকান প্রবাসি অর্ডর দিয়েছেন। উইম্যান এন্ড ই-কমার্স ফোরাম, হস্তশিল্পসহ ফেসবুকের কয়েকটি গ্রুপের সদস্য হয়েছি। বিশেষ করে উই ফেসবুক গ্রুপের সদস্য হওয়ার কারনে আমার ব্যবসার সফলতা পেতে শুরু করেছে। দেশে করোনা প্রভাব না হলে হয়তো আমি অনলাইনের ব্যবসায় আসতামই না। করোনার কারনেই আমি ব্যবসায় এসেছি এবং পরিবারকে কিছু সহয়তা করতে পারছি । তবে প্রয়োজনীয় পুজি না থাকায় ব্যবসার প্রসার ঘটাতে পারছি না। মুলধন বাড়াতে পারলে আশা করি এই ব্যবসায় আরো ভালো করতে পারবো।